সিলেটে কাল অন্যরকম এক কালবোশেখি ঝড় বয়ে গেলো। যে ঝড়ে ছিলো না কোন বৃষ্টি! কেবল ছিলো বাতাসের প্রচন্ড বেগ। সাথে ঠান্ডা হাওয়া। আর এমন অদ্ভুত শুষ্ক কালবোশেখি আগে দেখেন নি কেউ। যা ভাবনায় ফেললো অনেককেই। সিলেটে শনিবার বিকেল থেকেই ঝড়ের আভাস মিলছিলো। আকাশটায় ছিলো মেঘের সাজ। আর সন্ধ্যা নামতেই আসলো কালবোশেখির ঝড়।
ঝড়ের বেগ কাঁপিয়ে দেয় প্রকুতি। তবে অবাক করার বিষয় হলো এই ঝড়ে কোন বৃষ্টি নেই। সন্ধ্যা থেকে রাত প্রায় ১২ পর্যন্ত থেমে থেমে ঝড় বয়ে যায়। ৪-৫ ঘন্টার এই কালবোশেখিতে ছিলো প্রচন্ড বাতাস। সাথে হিমেল হাওয়া। কিন্তু একটিবারের জন্যও আকাশ ভেঙ্গে ঝরেনি বৃষ্টি। আর এমন অদ্ভুত শুষ্ক কালবোশেখিতে অবাক হয়েছেন অনেকে।
কেউ কেউ বলেছেন সময়ের সাথে যেন কালবোশেখিও তার ছন্দ হারিয়েছে। পাল্টেছে তার চেনা রঙ! প্রবীণদের কেউ কেউ বলেন, গত ৫০-৬০ বছরেও এমন শুষ্ক ঝড় তারা দেখেননি। তাদের মতে, কালবোশেখিতে প্রচন্ড বাতাসের সাথে প্রচুর বৃষ্টি ঝরে। উলট পালট হয়ে যায় প্রকৃতি। চারদিব ধারণ করে সবুজ বর্ণ। আর এটাই তার চিরচেনা বৈশিষ্ট। কিন্তু এমন ব্যাতিক্রমী কালবোশেখি নিশ্চয়ই ভাবনায় ফেলে দিলো। তবে কি প্রকৃতি তার চিরচেনা বৈশিষ্ট পাল্টিয়ে নতুন কোন রঙ ধারণ করছে এমন প্রশ্নও তাদের। এদিকে, বৃষ্টিহীন শুস্ক এই কালবোশেখিতে বড় কোন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। তবে বিভিন্ন জায়গায় কিছু গাছ-পালা উপড়ে গেছে। বিদ্যুৎ ব্যবস্থায় কিছুটা বিপর্যয় ঘটেছে। ঝড়ে বিভিন্ন গ্রামে গাছ-পালা উপড়ে গেছে বলে জানিয়েছেন প্রতিনিধিরা। এছাড়া বিদ্যুতের তারও ছিড়েঁ যায় অনেক জায়গায়।
এতে বিদ্যুৎবিহীন অন্ধকার নেমে আসে গ্রামগুলোতে। এতে করোনার এই অবরুদ্ধ সময়ে দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে তাদের। তবে বিদ্যৎবিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ঝড়ে সিলেটে বিদ্যুৎতের মূল লাইনে যান্ত্রিক গোলযোগ দেখা দেয়। কুমারগাওয়ে বৈদ্যুতিক সাবস্টেশনের ব্রেকার পুড়ে যায়। ফলে বিদ্যুতের বিপর্যয় নেমে আসে সগরে। রাতে অতিরিক্ত ব্রেকার দিয়ে মূল লাইন সংস্কার করা হয়েছে। বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগ সিলেটের প্রধান প্রকৌশলী মো. রফিকুল ইসলাম গণমাধ্যমে বলেন, ঝড়বৃষ্টির সময় সমস্যা হয়নি। কুমারগাওয়ে আমাদের মূল লাইনে সমস্যা দেখা দিয়েছে। এটি সমাধান করে কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু করা হয়েছে। অন্য এলাকাগুলো বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু করতে আমাদের কর্মীরা ঝড়ের মধ্যেও কাজ করছেন। এদিকে, রাতে এ রিপের্ট লেখা পর্যন্ত নগরীতে তীব্র বেগে বাতাস বইছে। সাথে মাঝে মাঝে আকাশে বিজলী চমকাচ্ছে। গর্জন দিচ্ছে নীল নীলাকাশ। তবুও আকাশ ভেঙ্গে বৃষ্টি ঝরেনি একটুও।
-সময়ের সংলাপ২৪/ডি-এইচ