প্রবল বন্যার আশঙ্কায় বাংলাদেশ - সময়ের সংলাপ24
DHAKA WEATHER

Post Bottom Ad

খুব শীগ্রই আমরা Somoyersonglap24.com ওয়েবসাইট নিয়ে আসছি..

প্রবল বন্যার আশঙ্কায় বাংলাদেশ

Share This

বন্যার আশঙ্কার সামনে রয়েছে বাংলাদেশ। দেশের উত্তরাঞ্চল ও পূর্বাঞ্চলের জেলাগুলোর নিম্নাঞ্চল বন্যায় প্লাবিত হতে পারে বলে সতর্ক করে দিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র। বোর্ডের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, এই বন্যা উত্তরাঞ্চলে এক সপ্তাহ ও পূর্বাঞ্চলে দুই-তিন দিন স্থায়ী হতে পারে।

ইতিমধ্যেই মাদারীপুর, লালমনিরহাট প্রভৃতি জায়গায় বন্যা শুরু হয়েছে। শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলায় নদীভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে হাজার হাজার পরিবার। ভারতের আসাম এবং পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিং ও জলপাইগুড়িতে ব্যাপক বৃষ্টিতে ব্রহ্মপুত্র ও গঙ্গা অববাহিকার পানি বাড়তে শুরু করায় বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটবে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।

গত জুন-জুলাইয়ে দেশে এক দফা বন্যা হয়। সেপ্টেম্বরে এসে আবার পদ্মা, যমুনা, তিস্তা, ধরলাসহ দেশের বেশ কয়েকটি প্রধান নদ-নদীর পানি প্রায়ই বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে গত বৃহস্পতিবার দেশের বিভিন্ন নদ-নদীর ৯৪টি পয়েন্টের মধ্যে ৭৪টির পানি বাড়লেও কোনো নদীর পানি বিপদসীমা অতিক্রম করেনি বলে জানা গেছে। কিন্তু যে কোনো মুহূর্তে এই নদ-নদীগুলোর পানি আবার বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে।

আপাতত নদীগুলোর পানি বিপৎসীমার নিচে থাকলেও দু-চারদিন আগেই উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে বগুড়ার ধুনট উপজেলায় যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।

তিস্তার পানিও সম্প্রতি প্রবাহিত হয়েছে ২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে। গত সোমবার রাতে তিস্তার পানি প্রথমে বিপদসীমার ১৫ সেন্টিমিটার, পরে রাত সাড়ে ১১টার দিকে বিপদসীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। তিস্তার আগ্রাসী বন্যায় নদীটির ডান তীরের দোহলপাড়া স্পারটির সামনের অংশের ১০ মিটার ইতিমধ্যেই নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ফলে নীলফামারীর ডিমলা ও জলঢাকা উপজেলা ও উপজেলার প্রায় ২০টি চরগ্রামের ৫ হাজার পরিবার হাঁটু থেকে কোমর পানিতে ডুবে দুর্বিষহ জীবনযাপন করছেন। সম্ভাব্য বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

ঢাকার মধ্যাঞ্চলের শরীয়তপুরে ভাঙছে পদ্মার তীর। পদ্মার তীব্র ভাঙ্গনে তীরবর্তী নড়িয়া উপজেলায় প্রায় দেড় হাজার বসতবাড়ি, স্কুল, মসজিদ, মাদ্রাসা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। সহায় সম্বলহীন হয়ে পড়েছে চার হাজারেরও বেশি পরিবার। নদী ভাঙনে ভিটেমাটি হারানোর ঝুঁকিতে আছেন আরও আড়াই লাখ মানুষ। এছাড়া নড়িয়া-সুরেশ্বর সড়কের মূলফৎগঞ্জ বাজার সংলগ্ন এলাকার প্রায় ২০০ মিটার পাকা সড়কও বিলীন হয়ে গেছে পদ্মার ভাঙ্গনে।

মাদারীপুরের দিকেও ভাঙছে পদ্মার পাড়। পদ্মার সঙ্গে ভাঙছে আড়িয়াল খাঁও। এই দুই নদীর যুগল আক্রমণে গৃহহীন হয়ে পড়েছে মাদারীপুরের প্রায় আট হাজার পরিবার।

সাম্প্রতিক বন্যায় তিস্তা ও ধরলা নদীর ভাঙ্গনও তীব্র আকার ধারণ করেছে। ভাঙ্গন কবলিত লালমনিরহাট এলাকার মানুষ নদীর করাল গ্রাসে সহায়-সম্বল হারিয়ে বাঁচার জন্য সংগ্রাম করছেন। জেলার বিভিন্ন গ্রামের পাঁচ শতাধিক ঘরবাড়ি, আবাদি জমি, স্কুল-কলেজ ধরলা ও তিস্তা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে।

গাইবান্ধাতেও তিস্তা তার আগ্রাসী রূপ বজায় রেখেছে। উত্তরাঞ্চলের এই জেলায় তিস্তার সঙ্গে ভাঙন অব্যাহত রেখেছে ব্রহ্মপুত্র নদও। তবে কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্র, ধরলা ও তিস্তা নদীর ভাঙন কিছুটা কমেছে।

সম্ভাব্য এই বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় দেশের উত্তরাঞ্চলের জেলা ও উপজেলা প্রশাসনকে সতর্ক করে দিয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়। পরিস্থিতি মোকাবেলায় পর্যাপ্ত প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনগুলোকে। এছাড়া পরিস্থিতি অনুযায়ী জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের কাছে থাকা ত্রাণসামগ্রী বণ্টনের জন্যও বলা হয়েছে। ত্রাণ মন্ত্রনালয়ের সঙ্গে সরকারের খাদ্য অধিদপ্তরও বন্যা মোকাবেলায় প্রস্তুতি নিচ্ছে। বন্যার সম্মুখীন এলাকাগুলোর খাদ্যগুদামগুলোতে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিতে নির্দেশনা পাঠিয়েছে খাদ্য অধিদপ্তর।

-সময়ের সংলাপ২৪/ডি-এইচ