সমগ্র বাংলাদেশ: রাজধানীর পান্থপথ থেকে ফার্মগেট যাওয়ার ব্যস্ততম এই সড়কে রাস্তার ডানদিকের পুরো ফুটপাত দখল হয়ে গেছে। কেবল ফুটপাত দখল করেই ক্ষান্ত হয়নি দখলদারের, সড়কের অনেকটা জায়গাও দখল করে নিয়েছে। ফুটপাতের ওপর বসে গেছে অবৈধ রিকশার গ্যারেজ, পান, সিগারেট, চায়ের দোকান, খাবারের ভ্রাম্যমাণ হোটেল। রাস্তার ওপর রিকশার সরাইয়ের দোকান। এতে সাধারণ মানুষের হাঁটাচলার পথ যেমন থাকছে না, তেমনি সড়কে তৈরি হচ্ছে যানজট।
সরেজমিনে দেখা গেছে, এই সড়কের ফুটপাতের ওপর রাখা হয়েছে প্রায় তিন শতাধিক রিকশা। ফুটপাতের ওপর জায়গা না হওয়ায় অনেক রিকশা আবার রাস্তার ওপরেও রাখা হয়েছে। ফুটপাতে কিছু দূর পর পর বসানো হয়েছে চা ও পান-সিগারেটের দোকান। রিকশা চালকদের খাওয়ার জন্য ফুটপাতের ওপর কাপড় দিয়ে ঘিরে খাবারের দোকানও দেওয়া হয়েছে। কেউ কেউ ফুটপাতের ওপরই ইট-ভাঙা সুরকি বিক্রি করছেন। সেই সুরকি ভাঙা হচ্ছে ফুটপাতের ওপরই। সব মিলিয়ে পথচারীদের হাঁটার জন্য কোনো জায়গা থাকছে না। রাস্তার অনেকাংশ দখল হওয়ার কারণে মানুষকে রাস্তার ওপর দিয়েই চলতে হচ্ছে। সেখানে অবৈধ রিকশার গ্যারেজ যানজটও তৈরি করছে।
এই ফুটপাতে সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গে এর দখল আরও বেড়ে যায়। অনেক রিকশাচালক সারা দিন রিকশা চালিয়ে সন্ধ্যার পর রিকশা জমা দিতে শুরু করে। এ ছাড়া সন্ধ্যার পর এখানে প্রকাশ্য গাঁজাসহ মাদকদ্রব্য বিক্রি করা হয়। গ্যারেজে রাখা রিকশায় বসেই মাদকসেবীরা মাদক গ্রহণ করে। ছিনতাই হওয়ার ঘটনাও ঘটেছে এই এলাকায়।
প্রথম আলোর অনুসন্ধানে জানা গেছে, অবৈধ এসব দখলের বিপরীতে নিয়মিত তোলা হয় চাঁদা। এই এলাকায় রিকশা রাখার জন্য প্রতিদিন রিকশা প্রতি চাঁদা দিতে হয় ১৫ টাকা। খাবারের দোকান ও চা-সিগারেটের দোকানের জন্য নেওয়া হয় ৫০ টাকা। মাদকদ্রব্য বিক্রেতাদের কাছে ১০০ টাকা করে চাঁদা নেওয়া হয়। এখানে রিকশা রাখেন—এমন দুজন নাম প্রকাশ না করে বলেন, এখানে প্রতিদিন প্রায় নয় হাজার টাকার চাঁদা ওঠে। বিভিন্ন পর্যায়ের এই চাঁদার টাকা ভাগাভাগি হয়। এই চাঁদার টাকা তোলেন আবদুল্লা নামের এক ব্যক্তি। চাঁদা নেওয়ার বিষয়ে কথা বলতে চাইলে তিনি কিছু না বলেই সেখান থেকে চলে যান।
এই পথ দিয়ে নিয়মিত যাতায়াত করেন রাজাবাজার এলাকার বাসিন্দা মো. আবদুর রশিদ বলেন, ফুটপাতে রিকশার গ্যারেজ থাকার কারণে এই ফুটপাত দিয়ে কখনো চলতে পারি না। বাধ্য হয়ে অন্যদিকের ফুটপাত বা রাস্তা দিয়ে চলতে হয়। তাঁর মতে, এই এলাকায় ফুটপাত-রাস্তা দখলের মহোৎসব চলছে।
ফার্মগেটে একটি কোচিং সেন্টারের ছাত্রী মনিরা সুলতানা পান্থপথ থেকে হেঁটে ফার্মগেট যান। তিনি বলেন, ‘ফুটপাতে হাঁটার জায়গা কই? তা ছাড়া দিনের বেলাতেই এখান দিয়ে গেলে বখাটে বা রিকশা চালকেরা বাজে মন্তব্য করে। পায়ে হাঁটার পথ তাই তিনি রিকশায় যাওয়া আসা করেন। অনেক সময় রিকশা না পেলে হেঁটে পথ চলেন, তখন প্রায়ই এমন খারাপ অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হন তিনি।
আরেক পথচারী অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা আবদুল মোমেন জানান, সন্ধ্যার পর থেকে এখানে মাদকসেবীরা প্রকাশ্যে মাদক গ্রহণ করেন। কিছুদিন আগে তাঁর পরিচিত একজনের এই এলাকায় রাত দশটার দিকে ছিনতাই হয়েছে বলে জানান তিনি।
স্থানীয় লোকজনের ভাষ্য, এটি ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের অধীনে। এলাকার অবৈধ দখল, মাদকসেবী ও বিক্রেতাদের বিষয়ে জানতে চাইলে ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফরিদুর রহমান খান বলেন, ‘দুই পাশের ফুটপাত আমার ওয়ার্ডের অন্তর্ভুক্ত নয়। রাস্তার দুই পাশের ফুটপাতের এক পাশে পাশের ফুটপাত আমার এলাকায়।’ তিনি দাবি করেন, তাঁর এলাকার ফুটপাতে এ ধরনের কোনো দখল নেই। আবদুল্লা নামের কাউকে চিনিও না।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বি এম এনামুল হক প্রথম আলোকে বলেন, এই ফুটপাত দখল করা হয়েছে। সিটি করপোরেশন সেখানে অভিযান চালাবে। শিগগিরই এসব অবৈধ দখল উচ্ছেদ করা হবে।
আরেক পথচারী অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা আবদুল মোমেন জানান, সন্ধ্যার পর থেকে এখানে মাদকসেবীরা প্রকাশ্যে মাদক গ্রহণ করেন। কিছুদিন আগে তাঁর পরিচিত একজনের এই এলাকায় রাত দশটার দিকে ছিনতাই হয়েছে বলে জানান তিনি।
স্থানীয় লোকজনের ভাষ্য, এটি ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের অধীনে। এলাকার অবৈধ দখল, মাদকসেবী ও বিক্রেতাদের বিষয়ে জানতে চাইলে ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফরিদুর রহমান খান বলেন, ‘দুই পাশের ফুটপাত আমার ওয়ার্ডের অন্তর্ভুক্ত নয়। রাস্তার দুই পাশের ফুটপাতের এক পাশে পাশের ফুটপাত আমার এলাকায়।’ তিনি দাবি করেন, তাঁর এলাকার ফুটপাতে এ ধরনের কোনো দখল নেই। আবদুল্লা নামের কাউকে চিনিও না।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বি এম এনামুল হক প্রথম আলোকে বলেন, এই ফুটপাত দখল করা হয়েছে। সিটি করপোরেশন সেখানে অভিযান চালাবে। শিগগিরই এসব অবৈধ দখল উচ্ছেদ করা হবে।