যা হোক, বিজ্ঞানীদের এতদিনের ধারণা সম্পূর্ণ বদলে গিয়েছে নতুন আবিষ্কৃত এক ফসিলের কারণে। এখন তাঁরা বলছেন, মাটিতে গর্ত খুঁড়ে চলাচলের জন্যই সাপেরা বিবর্তিত হয়ে তাদের পা হারিয়েছে। যুক্তরাজ্যভিত্তিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক ওয়েবসাইট ওয়্যার্ড জানিয়েছে এ খবর।
যুক্তরাজ্যের এডিনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক হংয়ু ই প্রায় নয় কোটি বছর আগের এক জীবাশ্ম, ডিনিলিসা প্যাটাগোনিকাকে পর্যবেক্ষণ করে আবিষ্কার করেছেন, সমুদ্রে থাকার কারণে নয়, বরং মাটির গর্তে বাস করা ও মাটির নিচে শিকার করার প্রবণতা থেকেই সাপেরা ক্রমান্বয়ে তাদের পা হারিয়েছে।
গবেষকরা ওই ফসিলের মাথার ভেতরে বিশেষভাবে বিবর্তিত একখণ্ড হাড় পেয়েছেন, যা কিনা ওই প্রাণীটির অভ্যন্তরীণ কানের অংশ। এর সঙ্গে তারা হাল আমলের সাপেদের মাথার খুলির তুলনা করে দেখেছেন যে, উভয় ক্ষেত্রেই মাথার গঠন একই রকম। এ থেকে তাদের ধারণা হয়েছে, সাপেদের প্রাচীন ওই পূর্বপুরুষ আসলে মাটির গর্তে চলাচলের চেষ্টার অংশ হিসেবেই ওই রকম খুলির অধিকারী হয়েছে।
ভূতাত্ত্বিকরা এর আগে বেশ কিছু পা-বিশিষ্ট সাপের ফসিল উদ্ধার করেছিলেন। এই বছরই আবিষ্কৃত একটি চার পেয়ে সাপের ফসিল পেয়ে তাঁদের ধারণা আরো পাকাপোক্ত হয় যে, সাপেরা মূলত মাটিতেই বসবাস করত। এবং তাদের বিবর্তনও ভূপৃষ্ঠেই হয়েছে।
এই গবেষণায় বিজ্ঞানীরা সিটি স্ক্যানের মাধ্যমে ফসিল ও আধুনিক সাপের খুলির থ্রিডি প্রিন্ট নির্মাণ করে মিলিয়ে দেখেছেন, যা আগে সম্ভব ছিল না। ফলে বিজ্ঞানীরা শুধু বাহ্যিক খুলির আকার দেখে ধরে নিয়েছিলেন আধুনিক সাপেরা পানিতে থাকার কারণেই বিবর্তিত হয়ে পা হারিয়েছে।
গবেষক হংয়ু ই বলেন, ‘আমরা আশা করি একই পদ্ধতিতে কুমির, গিরগিটি অথবা কচ্ছপের বিবর্তনের ব্যাপারেও আমরা নতুন তথ্য পাব।’
ব্যবহার না করার ফলেই অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ লোপ পাওয়ার ঘটনা অবশ্য নতুন কিছু না। মানুষের পূর্বপুরুষরা ব্যবহার না করার কারণেই তাদের লেজ হারিয়েছিল বলে মনে করেন বিজ্ঞানীরা। অবশ্য এ ধরনের পরিবর্তন ঘটতে লাখ লাখ বছর সময় লাগে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন