অগ্নি দুর্ঘটনার হাত থেকে নিরাপদ ও কার্যকর ব্যবস্থার নাম ‘ফায়ার হাইড্রেন্ট’। এটি মূলত রাস্তার ধারে স্থাপন করা এক ধরনের পানির কল। যা থেকে জরুরি পানি সরবরাহ করা যায়।
বিশ্বের প্রায় সব শহরে অগ্নি দুর্ঘটনা রোধে এ ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছে। এমনকি পাশের দেশ ভারতের কোলকাতাকেও এর আওতায় আনা হয় সেই ইংরেজ আমলেই। যেখানে কোলকাতাকে মাত্র একটি নদী আর ঢাকাকে বেষ্টন করে আছে চারটি নদী। কিন্তু অপরিকল্পিত এ ঢাকা নগরীতে আজও ফায়ার হাইড্রেন্ট ব্যবস্থা গড়ে তোলার কোনো উদ্যোগই নেয়া হয়নি। অথচ ফায়ার হাইড্রেন্ট মূলত স্থাপন করা হয়, ঘনবসতিপূর্ণ ঘিঞ্জি এলাকায় ও যেসব রাস্তায় অগ্নিনির্বাপক গাড়ি সহজেই প্রবেশ করতে পারে না।
নিমতলী এবং চকবাজারের ঘটনায় দেখা গেছে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা সরু অলিগলি পেরিয়ে দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছতে পারলেও প্রয়োজনীয় পানি সরবরাহের অভাবে দ্রুত সময়ের মধ্যে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেননি। ফলে আগুনের ব্যাপ্তি আর ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাণ বেশি হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ফায়ার হাইড্রেন্ট হচ্ছে পানির একটি সংযোগ উৎস। যা পানির প্রধান উৎসের সঙ্গে যুক্ত থাকে। যে কোন জরুরী প্রয়োজনে এই উৎস থেকে পানি ব্যবহার করা যায়। এর সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো এর সঙ্গে লম্বা পাইপ যুক্ত করে ইচ্ছে মতো যে কোন দূরত্বে পানি সরবরাহ করা যায়। তারা বলেন, আগুন নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থায় বহু আগে থেকেই ফায়ার হাইড্রেন্ট ব্যবহার হয়ে আসছে বিশ্বের প্রায় সব দেশেই।
ফায়ার হাইড্রেন্ট কীভাবে কাজ করে?
খুব সহজে বলতে গেলে ফায়ার হাইড্রেন্ট যুক্ত থাকে একটি বা একাধিক জলাধারের সঙ্গে। আর এর সঙ্গে থাকে অতি শক্তিশালী পাম্প। ব্যবহারের সময় এ পাম্প চালু হয়ে যায় এবং জোরে এর মুখ দিয়ে পানি নির্গত হতে থাকে। চালু হওয়া থেকে পানি বের হওয়া পর্যন্ত সর্বোচ্চ তিন মিনিট সময় লাগে।
একটি ফায়ার হাইড্রেন্ট থেকে মিনিটে ৫০০ থেকে ১৫০০ গ্যালন পানি বের হয়।
ফায়ার হাইড্রেন্টের জলাধারগুলো সাধারণত প্রাকৃতিক পানির উৎস যেমন নদী, লেক এর সঙ্গে যুক্ত থাকে এবং এগুলোর অবস্থান পানির উৎস থেকে নীচুতে থাকে যাতে করে পানির সম-উচ্চশীলতার কারণে উৎস থেকে জলাধারে আপনাআপনি পানি চলে যায়। যার কারণে ফায়ার হাইড্রেন্টের পানির সরবারহ যতক্ষণ প্রয়োজন ততক্ষণই থাকে। ফায়ার হাইড্রেন্ট থেকে হোসপাইপের সাহায্যে আগুনের উৎসের কাছে পানি নিয়ে যাওয়া যায়।
যেভাবে ফায়ার হাইড্রেন্ট কাজ করে তার একটি ভিডিও সংযুক্ত করা হলো-
-সময়ের সংলাপ২৪/ডি-এইচ
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন