আইএস এর হয়ে ইরাক ও সিরিয়ায় যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করে সারা বিশ্ব প্রায় ৪০ হাজারের বেশি বিদেশি যোদ্ধা। এদের মধ্যে প্রায় ৪০ জন যোদ্ধা বাংলাদেশি। জাতিসংঘ, ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপ ও লন্ডনের কিংস কলেজের ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর দি স্টাডি অব র্যাডিক্যালাইজেশন বরাত দিয়ে এমন প্রতিবেদন প্রকাশ করে বিবিসি।
বিশ্বের নানা দেশ থেকে জিহাদিদের ইরাকে যাওয়ার শুরু হয় ২০০৩ সালে যখন সাদ্দাম হোসেনের পতন হয়। সুন্নি বিদ্রোহীদের পক্ষে লড়াই করতে বিশ্বের নানা দেশ থেকে মুসলিম তরুণ-যুবকরা ইরাকে হাজির হতে শুরু করে।
ইরাকের সেই সুন্নি বিদ্রোহ থেকে পরে জন্ম নেয় ইসলামিক স্টেট বা আইএস, যারা ইরাক এবং সিরিয়ার কিছু অংশ নিয়ে খিলাফত বা একটি আদর্শ ইসলামি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেয়। তারপর থেকেই ঐ অঞ্চলে বিদেশী যোদ্ধাদের স্রোত শুরু হয়ে যায়।
আর ২০১১ সালে সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ শুরুর পর, বিদেশী এসব জিহাদিদের প্রধান গন্তব্য হয়ে দাঁড়ায় সিরিয়া।
ওই প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, ইসলামিক স্টেটে যোগ দিতে যাওয়া বিদেশি যোদ্ধাদের সংখ্যা ৪০,০০০ বা আরো বেশি হতে পারে।
এ বিষয়ে জাতিসংঘ জানায়, পৃথিবীর ১১০টি দেশ থেকে ৪০ হাজারেরও বেশি বিদেশি যোদ্ধা ইরাক ও সিরিয়ায় গেছে।
প্রতিবেদনটিতে বাংলাদেশি যোদ্ধাদের নিয়ে বলা হয়, বাংলাদেশ থেকে আইএসে যোগ দিতে যায় ৪০ জন যাদের মধ্যে ২৫ জন দেশে ফিরে গেছে বলে এক আন্তর্জাতিক জরিপে বলা হয়েছে। এর সূত্র হিসেবে ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের ২০১৮ সালের এক গবেষণাসহ দুটি রিপোর্টকে উদ্ধৃত করা হয়।
সুইডেন নিবাসী ইসলামী জঙ্গিবাদ গবেষক তাসনিম খলিল বলেন, বিভিন্ন সূত্র তিনিও জানতে পেরেছেন জনা চল্লিশেক বাংলাদেশি আইএসের হয়ে যুদ্ধ করতে গিয়েছিল। তবে, তারা সবাই যে সরাসরি বাংলাদেশ থেকেই গিয়েছিল তা নয়, অন্য কয়েকটি দেশে বসবাসরত কিছু বাংলাদেশিও তাদের মধ্যে ছিল।
লন্ডনের কিংস কলেজের ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর দি স্টাডি অব র্যাডিক্যালাইজেশন (আইসিএসআর) ২০১৮ সালের জুলাই মাসে প্রকাশিত এক রিপোর্টে বলেছে, শুধুমাত্র ইসলামিক স্টেটে যোগ দিয়েছে এমন বিদেশির সংখ্যা ৪১ হাজার ৪৯০ জন।
এদের মধ্যে পুরুষের সংখ্যা ৩২ হাজার ৮০৯, মহিলার সংখ্যা ৪ হাজার ৭৬১ এবং শিশুর সংখ্যা ৪ হাজার ৬৪০। তারা সবাই বিশ্বের মোট ৮০টি দেশ থেকে এসেছে।
এই প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, মধ্যপ্রাচ্য এবং উত্তর আফ্রিকার দেশগুলো থেকে আইএসে যোগ দেয় ১৮ হাজার ৮৫২ জন; পশ্চিম ইউরোপ থেকে ৫,৯০৪ জন; পূর্ব এশিয়া থেকে ১০১০ জন; দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া থেকে ১০৬৩ জন; আমেরিকা-অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ড থেকে ৭৫৩ জন, দক্ষিণ এশিয়া থেকে ৪৪৭ জন এবং সাব-সাহারা অঞ্চলের দেশগুলো থেকে ২৪৪ জন। আর ব্রিটেন থেকে গিয়েছিল কম-বেশি ৮৫০ জন, যাদের মধ্যে ১৪৫ জন নারী এবং ৫০টি শিশু।
-সময়ের সংলাপ২৪/ডি-এইচ
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন