পৃথিবীর সবচেয়ে ভয়ঙ্কর পাখি! - সময়ের সংলাপ24
DHAKA WEATHER

Post Bottom Ad

demo-image

পৃথিবীর সবচেয়ে ভয়ঙ্কর পাখি!

Share This
খুব শীগ্রই আমরা Somoyersonglap24.com ওয়েবসাইট নিয়ে আসছি..

কেসোয়ারি পাখিটির নাম শুনেছেন কখনো? পৃথিবীতে বসবাসরত তৃতীয় বৃহৎ পাখি এটি। এদের উচ্চতা হতে পারে সর্বোচ্চ ২ মিটার, ওজন হতে পারে ৬০ কেজি পর্যন্ত, মাঝারি সাইজের একজন মানুষের সমপর্যায়ের। শুধু আকারেই বিশাল নয়, এ পাখিটি পৃথিবীর ভয়ঙ্করতম পাখি হিসেবেও স্বীকৃত!

কেসোয়ারিরা শক্তিমত্তার দিক থেকেও অন্যান্য পাখিদের থেকে যোজন যোজন এগিয়ে। এত বেশি ওজন নিয়েও এ পাখিরা প্রায় সাড়ে ছয় ফুট উচ্চতা পর্যন্ত লাফাতে পারে, দৌড়াতে পারে ৩১ মাইল প্রতি ঘণ্টা বেগে। এ দুর্দান্ত বৈশিষ্ট্যই তাদের শত্রুর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে অনবদ্য করে তুলেছে। এদের থাবার দৈর্ঘ্য হয় প্রায় ১২ সেন্টিমিটার, যেটিকে তারা লড়াইয়ের সময় খড়গের ন্যায় অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে। উটপাখি ও পেঙ্গুইনের মতো কেসোয়ারি পাখিরাও উড়তে অক্ষম।

কালো রঙের পালকে বিশাল দেহ আবৃত থাকার কারণে এদের অনেকটা টার্কি জাতের পাখি বলে ভ্রম হয়। এদের মাথার উপরের দিকে নীল ও ঘাড়ের দিকটায় লালচে পালক দেখতে পাওয়া যায়। এদের মাথায় থাকে একটিমাত্র লম্বা পালক দিয়ে তৈরি ঝুঁটি। কেসোয়ারি পাখিদের দৃষ্টি বেশ প্রখর, এদের বিশালাকৃতির সম্মুখদিকমুখী চোখের পেছনে কারণ হিসেবে কাজ করে। পাশাপাশি রয়েছে এদের তীক্ষ্ম শ্রবণ শক্তি, কেসোয়ারিরা নিজেরা নিজেদের মধ্যে খুব অল্প কম্পাঙ্কের শব্দ তৈরি করে যোগাযোগ করে, যা মানুষের পক্ষে শোনা সম্ভব নয়।

অন্যান্য পাখিদের তুলনায় কেসোয়ারিদের ডাকের কম্পাঙ্ক খুবই কম। প্রতিবছর মানুষের ওপর কেসোয়ারিদের গড়ে অন্তত দুই শতাধিক আক্রমণের খবর পাওয়া যায়। তবে কেসোয়ারির আক্রমণে সর্বশেষ মানুষের মৃত্যুর খবর পাওয়া যায় ১৯২৬ সালে, ফিলিপ ম্যাকক্লিন নামের ১৬ বছর বয়সের এক তরুণ একটি কেসোয়ারির তাড়া খেয়ে গলায় প্রচণ্ড আঘাত পায় এবং পরবর্তীতে মৃত্যুবরণ করে।

তবে হুমকি অনুভব না করলে কেসোয়ারিরা সাধারণত আক্রমণ করে না বলেই জানা যায়। অধিকাংশ সময় মানুষ যখন খাবার দিতে এদের খুব কাছে চলে যায়, তখন এরা ক্ষিপ্ত হয়ে আক্রমণ করে বসে। কারণ খুব কাছে ঘেঁষলেই এরা নিজেরা আক্রান্ত হচ্ছে বলে মনে করে এবং তখন আত্মরক্ষার কৌশল হিসেবে আক্রমণের পথ বেছে নেয়। বহু মানুষ যারা কেসোয়ারি পাখিদের নিয়ে অথবা তাদের রক্ষায় কাজ করে, তারা দাবী করেন কেসোয়ারিরা বেশ নম্র স্বভাবের, এরা শুধু নিজেরা নিজেদের মতো থাকতে চায় এবং চায় অন্যের সমীহ। তবে বিরক্ত না করলেও অহরহ এরা কুকুরদের আক্রমণ করে বসে। এদের শক্ত চঞ্চু দিয়ে ঠোকর মেরে এরা সহজেই বাড়ির দরজা জানালা ভেঙে দেয়।

ক্রিস্টোফার কফ্রন ১৯৯৯ সালে ২২১ ধরণের কেসোয়ারি আক্রমণ নিয়ে একটি গবেষণা সম্পন্ন করেন। এদের মধ্যে ৭ টি আক্রমণ তারা করেছিলো নিজস্ব সীমানা রক্ষার্থে। ৩২ টি আক্রমণ ছিলো প্রতিরক্ষামূলক, ডিম কিংবা বাচ্চাকে রক্ষা করতে তারা এসব আক্রমণ করে। তবে সর্বাধিক ১০৯ টি আক্রমণ সংঘটিত হয় মানুষ যখন এদের খাবার দিতে গিয়ে, দেয়া শেষ হলে যখন খাবার দেয়া বন্ধ করে তখন। হঠাৎ খাবার দেয়া শেষ হলে এরা বেশ বিক্ষুদ্ধ হয়ে ওঠে মানুষের দিকে তেঁতে যায়।

নিউ গিনি এবং অস্ট্রেলিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে কেসোয়ারি পাখিদের দেখতে পাওয়া যায়। উত্তর অষ্ট্রেলিয়ার রেইনফরেস্টগুলোর জন্য কেসোয়ারিরা বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। বিশেষ করে বীজের বিস্তরণের ক্ষেত্রে এরা তাৎপর্যপূর্ণ প্রাণী। কেসোয়ারিরা ফল খেয়ে বেঁচে থাকে, তাই কিছু ফলের বীজ এদের পরিপাকতন্ত্রে পরিপাক না হয়ে মলের মাধ্যমে বাইরে নিঃসরিত হয়। এভাবেই কেসোয়ারি পাখিরা ফলের বীজ এক স্থান থেকে অন্য স্থানে স্থানান্তর করে রেইন ফরেস্টের বিস্তৃতি বাড়ায়।

প্রচণ্ড শক্তিধর হলেও এ পাখিরা বেশ শান্তিপ্রবণ। মানুষের কাছে এদের প্রাকৃতিক আবাসস্থল প্রতিনিয়ত খোয়া যাচ্ছে, যা তাদেরকে আক্রমণে আরো উস্কে দিচ্ছে বলে অনেক বিশেষজ্ঞ মত দেন।

-সময়ের সংলাপ২৪/ডি-এইচ
Comment Using!!

Pages