প্রায় এক যুগ আগে ১/১১’এ জারি হওয়া জরুরি অবস্থা চলাকালে প্রভাবশালী হয়ে ওঠা ব্যক্তিরা এখন দেশে আসতে চাইছেন না। যাদের বিরুদ্ধে মামলা নেই, তারাও বিদেশে থাকাকেই নিরাপদ বোধ করছেন।
এই ব্যক্তিরা হলেন ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি জরুরি অবস্থা জারির পর দায়িত্ব নেওয়া তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ফখরুদ্দীন আহমদ, সেনাবাহিনীর সাবেক প্রধান মইন উ আহমেদ, ব্রিগেডিয়ার (চাকরিচ্যুত) এটিএম আমিন ও ব্রিগেডিয়ার ফজলুল বারী।
চার কুশীলবের দুজন যুক্তরাষ্ট্রে এবং একজন মধ্যপ্রাচ্যের কোনো দেশে আছেন বলে তথ্য রয়েছে। বাকি একজনের বিষয়ে সেই তথ্যটুকুও নেই।
২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব ছেড়ে দেন সাবেক রাষ্ট্রপতি ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদ। আর প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ফখরুদ্দীন আহমদ।
তৎকালীন সেনা কর্মকর্তাদের সমর্থনে ওই নতুন তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করা হয় বলে প্রচার আছে। এ জন্য এই সরকারকে সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার বলা হয়।
শুরুতে আওয়ামী লীগ স্বাগত জানালেও ওই সরকার নির্বাচন না দিয়ে ক্ষমতা প্রলম্বিত করে। আর একপর্যায়ে গ্রেপ্তার করা হয় আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনাকে। পরে গ্রেপ্তার হন বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াও।
দুই দলেরই শীর্ষ নেতাদের সে সময় দুর্নীতির মামলার আসামি করা হয়। কারও কারও সাজাও হয়। তবে ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর নির্বাচন দেয় ওই সরকার। বিপুল ভোটে জিতে ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ।
আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর ফখরুদ্দীন আহমদ দেশ ত্যাগ করে যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্বব্যাংকের অধীনে চাকরি নেন। আর সেনাপ্রধানের পদ থেকে স্বাভাবিক অবসরে যান মইন উ আহমেদ। এরপর তিনিও চলে যান যুক্তরাষ্ট্রে তার স্বজনের কাছে। তিনি জটিল রোগে আক্রান্ত বলে তথ্য থাকলেও এই দুজনের বিষয়ে এখন বিস্তারিত কোনো তথ্য মিলছে না।
এই দুজন দেশ ছাড়ার পর আর ফেরেননি। কেন ফেরেননি, সেই ব্যাখ্যাও দেওয়া হয়নি। তবে তাদের বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই।
ওই সরকারের আমলে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠা গোয়েন্দা কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার (চাকরিচ্যুত) এটিএম আমিন কোথায় অবস্থান করছেন, তার নিশ্চিত তথ্য নেই। অসমর্থিত তথ্য অনুযায়ী তিনি মধ্যপ্রাচ্যের কোনো একটি দেশে অবস্থান করছেন।
ফজলুল বারীও পলাতক আছেন। তবে কোথায় আছেন, সেটিও জানা যায়নি।
-সময়ের সংলাপ২৪/ডি-এইচ