বিপিএল ফাইনাল: আসল দর্শকরাই বঞ্চিত - সময়ের সংলাপ24
DHAKA WEATHER

Post Bottom Ad

খুব শীগ্রই আমরা Somoyersonglap24.com ওয়েবসাইট নিয়ে আসছি..

বিপিএল ফাইনাল: আসল দর্শকরাই বঞ্চিত

Share This
বিপিএল ফাইনাল: আসল দর্শকরাই বঞ্চিত

বিপিএলের ফাইনাল খেলবে মাশরাফী ও সাকিবের দল। উত্তেজনার পারদ আগের আসরগুলোর চেয়ে বেড়েছে বহুগুণ। মাঠে গিয়ে খেলা দেখা চাই-ই-চাই। সন্ধ্যা ৬টার ম্যাচ দেখতে ভোর পাঁচটা থেকে শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামের ১ নম্বর গেটে লাইন ধরেছেন কয়েকজন তরুণ। তবে আজিমপুর থেকে আসা ওই তরুণরা টিকিট পাননি দুপুর গড়িয়ে যাওয়ার পরও।

সকাল ১০টায় খোলা হয় টিকিটের বুথ। এক তরুণ জানালেন, সামনে যে মহিলারা দাঁড়ানো তারাই এখানকার সর্বেসর্বা। তাদের দল শুধু বড়ই হচ্ছে আর আমরা পেছনে পড়ে থাকছি। এখানে টিকিট নিয়ে নাটক চলছে!

মিরপুর একাডেমি ভবন সংলগ্ন বুথে লম্বা লাইনে সামনের কাতারে ৪০-৫০ জন নারী। তাদের মধ্যে কারো কারো বয়স ৫০ ছাড়িয়েছে। তারা এসেছেন ফাইনালের টিকিট কিনতে। মধ্যবয়সী এক নারী কাউন্টারের সামনের রেলিং বেয়ে উঠে গেলেন উপরে। মনে হতে পারে ক্রিকেট জোয়ারের অংশ বুঝি। না, তাদের কেউ ‘ক্রিকেট’ শব্দটিই উচ্চারণ করে বলতে পারেন না। ফাইনালে কারা লড়বেন সেটি জানা তো অনেক দূরের কথা।

টিকিট কিনে এই নারীরা তবে কী করবেন? কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল কলোবাজারিরা টিকিট পেতে স্ত্রী, বোন, এমনকি মা ও শাশুড়িকেও লাইনে দাঁড় করিয়েছেন। যারা আপনজনকে আনতে পারেনি তারা টাকার বিনিময়ে ভাড়া করে এনেছেন প্রতিবেশী বয়স্ক নারীদের। তারাই একত্রিত হয়ে বুথের সামনের লাইনটা বড় করছেন।

টিকিটের জন্য দাঁড়ানো স্থানীয়দের কয়েকজন জানাল লাইনে দাঁড়ানো অনেকেই মাদকব্যবসায়ী! একটি টিকিট কিনে দশগুণ দামে বিক্রি করে সেই টাকা দিয়ে মাদক কিনে আবার বিক্রি করবে। অনেকের মাদকসেবী স্বামী তাদের পাঠিয়েছেন এখানে। ক্রিকেট কী সেটি বোঝার কী-বা দরকার আছে তাদের। দরকার শুধু টাকার।

স্টেডিয়ামের বাইরে দায়িত্বে নিয়োজিত এক পুলিশ সদস্য আক্ষেপ করেই বললেন, এই নারীরা কারা আমরা তা জানি। কিন্তু লাইনে দাঁড়ালে তো আমরা তাদের লাঠিপেটা করে বের করে দিতে পারি না।

লাইনে দাঁড়ানো দর্শকদের অভিযোগ শুধু ওই মহিলাদের নিয়েই নয়। প্রশাসনের ‍উপরও ক্ষোভ ঝাড়লেন কয়েকজন। হেলাল নামের এক তরুণ বলেন, পুলিশের লোকজন এসে ১০টা করে টিকিট নিয়ে যাচ্ছে কাউন্টার থেকে। আর আমরা ভোর রাত থেকে দাঁড়িয়েও টিকিট পাচ্ছি না। এটা অনেক বড় অন্যয়।

যারা সারা বছর দেশ-বিদেশের ক্রিকেট অনুসরণ করেন, খেলা নিয়ে ভাবেন। সেই ক্রীড়াপ্রেমী দর্শকরাই বঞ্চিত হচ্ছেন। মিরপুর ইনডোর স্টেডিয়ামের অস্থায়ী কাউন্টারেও একই অবস্থা। সেখানে টিকিটের স্বল্পতা থাকলেও স্টেডিয়ামের প্রত্যেকটি গেটে ফাইনাল ম্যাচ টার্গেট করে বসেছে কালোবাজারির হাট। পূর্ব গ্যালারির ৩০০ টাকার টিকিট হাঁকানো হচ্ছে ১৫০০ টাকা। দুপুরের পর ডাবল দামেও টিকিট মিলবে না বলে প্রকাশ্যে প্রশাসনের সামনেই আওয়াজ তুলছে তারা।

বিপিএল ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট হওয়ায় মোট টিকিটের বড় একটা অংশ চলে যায় টিমের সত্ত্বাধিকারী, স্পন্সর প্রতিষ্ঠান ও সৌজন্য টিকিট হিসেবে কর্পোরেট অফিস আর খেলাধুলার সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের কাছে। বাকি যা থাকে, সেটির বড় অংশই কালোবাজারিতে! বছরের পর বছর চলা এসব অব্যবস্থাপনা দেখার যেন কেউ নেই!

এবার দেশের শীর্ষ দুটি ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের (বসুন্ধরা ও বেক্সিমকো) দল ফাইনালে ওঠায় তাদের কাছেও টিকিটের চাহিদা বেশি। সমর্থকদের দিতে তারাই নাকি কিনে নিয়েছেন ১৫ হাজার টিকিট। বিসিবি পাবে ৩ হাজারের মতো টিকিট। বাকি ৪ হাজার টিকিট কেবল সাধারণ দর্শকদের জন্য। তাতে টিকিটের জন্য হাহাকার বেড়েছে। সুযোগটা কাজে লাগাচ্ছে কালোবাজারিরা।

-সময়ের সংলাপ24/ডি-এইচ