ঢাকা: নাইকো দুর্নীতি মামলায় আত্মসমর্পণের জন্য আজ সোমবার আদালতে যাবেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। তবে বেগম জিয়ার আত্মসমর্পণের এই বিষয়টি ভিন্ন দিকে প্রভাবিত হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে তার দল বিএনপি। এ নিয়ে দলের অভ্রান্তরে চলছে নানান ধরনের জল্পনা-কল্পনা। আদালত কি বেগম জিয়াকে সাজা দিয়ে কারাগারে প্রেরণ করবেন? না কি জামিনে মুক্তি দিয়ে আবারও আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিবেন? অথবা বাস্তবায়িত হতে যাচ্ছে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর ‘স্বপ্ন’। আর সে সব প্রশ্ন নিয়ে সরগরম দলের শীর্ষ স্থান থেকে তৃণমূলের নেতাকর্মীদের মধ্যে। বিষটি নিশ্চিত করেছে বিএনপির একাধিক সূত্র।
এই বিষয়ে বিএনপির একাধিক নেতাদের ভাষ্য, প্রতিবারের মতো এবারও বেগম জিয়া আদালতে হাজিরা দিতে যাবেন। ফলে এ বিষয়ে আমরা চিন্তিত নই। তবে এবার খালেদা জিয়া আদালতে হাজিরা নয়, আত্মসমর্পণ করবেন। তাই বিষয়টি ভিন্ন দিকেও যেতে পারে বলে আমরা আশঙ্কা করছি।
বিএনপি নেতারা বলেন, চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে নিয়ে হাসানুল হক ইনু বলেছেন, গণতন্ত্রের জন্য খালেদা জিয়াকে সাজা দিয়ে রাজনীতি থেকে বিদায় জানানো হবে। তাই এই কথায় আমাদের চিন্তুাটা আরো বেশি হচ্ছে।
এই বিষয়ে বিএনপির গণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া বাংলামেইলকে বলেন, ‘বেগম জিয়া আদালতে আত্মসমর্পণ করবেন, একথা আমরা জানি। তবে তার সাজা হবে কি হবে না সেটা আদালত বলতে পারবেন। কিন্তু তথ্যমন্ত্রী যে কথা বলেছেন, সেটা একটি প্রেক্ষাপট। আর সাজা হওয়াটা আরেকটি প্রেক্ষাপট।
তবে এই বক্তব্যের সাথে দ্বিমত পোষণ করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আ স ম হান্নান শাহ তথ্যমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য বাংলামেইলকে বলেন, ‘সরি’ এসব পাগল-ছাগলের কথা আমি পড়ি না।
হাসানুল হক ইনুর বক্তব্যে প্রসঙ্গে একই আভাস দিয়ে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান বাংলামেইলকে বলেন, ‘তথ্যমন্ত্রী বেগম জিয়াকে নিয়ে নানান সময় নানা রকম কথা বলেন। তাই তার কথা আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি না।’
খালেদার আদালতে উপস্থিত হওয়া উপলক্ষে গণজমায়েতের ব্যবস্থা করবেন কি না এমন প্রশ্নের জবাবে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, ‘আমাদের এমন পরিকল্পনা নেই। তবে খালেদা জিয়া আদালতে যাচ্ছেন। খবরটি মিডিয়ায় দেখে নেতাকর্মীরা উপস্থিত হবেন।’
উল্লেখ, ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে এই নাইকো দুর্নীতি মামলা দায়ের করা হয়। এ মামলায় ২০০৮ সালের ৫ মে খালেদা জিয়াসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় দুদক। পরে এ মামলা বাতিল চেয়ে খালেদা জিয়ার করা আবেদনে ২০০৮ সালের ৯ জুলাই খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে নাইকো দুর্নীতি মামলার কার্যক্রম স্থগিত করেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে রুল জারি করেন। এ রুলের উপর হাইকোর্টে চলতি বছরের ১৯ এপ্রিল শুনানি শুরু হয়ে শেষ হয় ২৮ মে। এরপর আদালত রায়ের জন্য অপেক্ষমান রাখেন। এরপর ১৮ জুন রুল খারিজ করে রায় ঘোষণা করেন হাইকোর্ট।
১৮ জুন হাইকোর্ট তার রায়ে বলেছিলেন, এ মামলার কার্যক্রম নিম্ন আদালতে চলবে এবং রায়ের অনুলিপি হাতে পাওয়ার দু’মাসের মধ্যে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে আদালতে আত্মসমর্পণ করতে হবে। গত ২৯ সেপ্টেম্বর হাইকোর্টের ওই রায়ের কপি ঢাকার ৯ নম্বর বিশেষ জজ আদালতে এসে পৌঁছালে পরদিন ওই আদালতের বিচারক ৩০ নভেম্বর মামলাটির পরবর্তী তারিখ নির্ধারণ করেন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন