সিলেটের দক্ষিণ সুরমার লালাবাজার ইউনিয়নের বিবিদইল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির মেয়াদ থাকা সত্বেও জালিয়াতির মাধ্যমে কমিটি নতুন কমিটি গঠনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের বর্তমান ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি, সাবেক চেয়ারম্যান পীর ফয়জুল হকসহ কমিটির ৫ জন সদস্য সিলেট জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবরে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন।
অভিযোগে তারা জালিয়াতির মাধ্যমে গঠিত এই কমিটি গঠন সংক্রান্ত স্মারকপত্রের কার্যকারিতা স্থগিত করার এবং জালিয়াতির সাথে জড়িত বিদ্যালয়ের বর্তমান প্রধান শিক্ষকের অপসারণ চেয়েছেন।
অভিযোগে উল্লেখ, দক্ষিণ সুরমার লালাবাজার ইউনিয়নের বিবিদইল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির আগের কমিটির সভাপতি আব্দুল ওহাব খান মৃত্যুবরণ করলে কমিটির অবশিষ্ট মেয়াদের জন্য সকল সদস্যবৃন্দের সর্বসম্মত মতামতে গত ৩০/০৬/২০২১ তারিখে কমিটি পুনর্গঠন করা হয়।
পুনর্গঠিত কমিটিতে বিবিদইল বালিকা উচ্চবিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি হিসেবে লালাবাজার ইউনিয়ন পরিষদের তৎকালীন চেয়ারম্যান পীর মো. ফয়জুল হক-কে সভাপতি হিসেবে মনোনীত করা হয়। গত প্রায় এক বছর যাবত বর্তমান সভাপতি পীর মো. ফয়জুল হকের নেতৃত্বে ম্যানেজিং কমিটির সকল সদস্য বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনার সার্বিক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন। আগামী ৯ জুন পর্যন্ত বর্তমান ম্যানেজিং কমিটির মেয়াদ রয়েছে।
কিন্তু বর্তমান ম্যানেজিং কমিটির সদস্যরা লোকমুখে জানতে পারেন যে, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্যসচিব মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বিদ্যালয়ের বর্তমান ম্যানেজিং কমিটিকে কোনোরূপ অবহিত না করে মো. দিলওয়ার আলী খানকে সভাপতি করে ১২ সদস্য বিশিষ্ট একটি ম্যানেজিং কমিটি গঠন করেছেন। খোঁজ নিয়ে কমিটির নেতৃবৃন্দ জানতে পারেন- কথিত এই কমিটি গঠনের লক্ষ্যে গত ১৭ এপ্রিল একটি সভার রেজুলেশন রেজিস্ট্রার খাতায় রয়েছে এবং এর কপি শিক্ষাবোর্ডে দাখিল করা হয়েছে। কিন্তু এ সভার ব্যাপারে ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের কেউ-ই অবগত নন এবং এ ধরনের কোনো সভাই অনুষ্ঠিত হয়নি। জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম ওই তারিখের ভুয়া রেজুলেশন তৈরি করেছেন। ম্যানেজিং কমিটির কোনো সদস্যের স্বাক্ষর এ রেজুলেশনে নেই। বরং তাদের স্বাক্ষর ঐ রেজুলেশনে জাল করা হয়েছে। এছাছাও এ রেজুলেশনে বিদ্যালয়ে ৩ জন শিক্ষক প্রতিনিধি- মো. মাহবুবুল আলম, মো. গোলাম মোস্তফা ও সায়মা বাহার চৌধুরী এবং অভিভাবক সদস্য আব্দুল বারী, চাম্পা লাল দেব ও সংরক্ষিত মহিলা অভিভাবক সদস্য মোছা. খাদিজা বেগমের স্বাক্ষরও জাল করা হয়েছে।
বিষয়টি জানতে পেরে বিবিদইল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি, লালাবাজার ইউনিয়ন পীর মো. ফয়জুল হক (সভাপতি), দাতা সদস্য জাহাঙ্গীর আলম, অভিভাবক সদস্য আছাব উদ্দিন, সদস্য ফিরোজ আলী (সদস্য) ও কয়েছ আহমদ (সদস্য) বিবিদইল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য সচিব মোহাম্মদ সাইফুল ইসলামের জাল-জালিয়াতির বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে তাকে অবিলম্বে বরখাস্ত করা এবং ম্যানেজিং কমিটি গঠন সংক্রান্ত সিলেট শিক্ষা বোর্ডের স্মারকপত্রের কার্যকারিতা স্থগিত করার আবেদন জানানো হয়েছে।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে দক্ষিণ সুরমা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সত্যব্রত রায় গণমাধ্যমকে বলেন, বিবিদইল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের কমিটি পুনর্গঠন করে এ বিষয়ে যথাযথ রেজুলেশন দেখে তা অনুমোদনের জন্য শিক্ষাবোর্ডে প্রেরণ করা হয়। ফলে, শিক্ষাবোর্ড কর্তৃপক্ষ এ কমিটি অনুমোদন করেছেন। রেজুলেশনের বিষয়ে ম্যানেজিং কমিটির সচিব হিসেবে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বলতে পারবেন। রেজুলেশনে কারো স্বাক্ষর জাল করা হলে বিষয়টি তদন্ত করে দেখা যেতে পারে।
সিলেট জেলা শিক্ষা অফিসার অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ম্যানেজিং কমিটি অনুমোদন করেছে শিক্ষা বোর্ড। এটি বাতিল বা স্থগিত করাও বোর্ড কর্তৃপক্ষের এখতিয়ার। অভিযোগের বিষয়ে শিক্ষা বোর্ড কর্তৃপক্ষের মতামত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সূত্র : সিলেটভিউ২৪ডটকম
-সময়ের সংলাপ২৪/ডি-এইচ
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন