ব্রয়লার মুরগি থেকে করোনা ছড়ায় না - সময়ের সংলাপ24
DHAKA WEATHER

Post Bottom Ad

খুব শীগ্রই আমরা Somoyersonglap24.com ওয়েবসাইট নিয়ে আসছি..

ব্রয়লার মুরগি থেকে করোনা ছড়ায় না

Share This
ইংরেজিতে বলা হয় ‘মাদার নেচার’, যা সহজ বাংলায় ‘প্রকৃতি মা’। মা যেমন সন্তানকে সব বিপদ থেকে আগলে রাখার চেষ্টা করেন; তেমনি প্রকৃতিও তার সন্তানের জন্য প্রকৃতির মধ্যেই সমাধান রেখে দিয়েছে। সেটি বোঝা যায় একটি প্রবাদ বাক্যে, ‘খাদ্যই ওষুধ আবার ওষুধই খাদ্য’। বিস্তারিত জানাচ্ছেন ডা. মো. ইব্রাহিম খলিল-

আমরা সবাই করোনাভাইরাস নিয়ে প্রচণ্ড রকম শঙ্কিত। এমতাবস্থায় বিজ্ঞানীরা ব্যস্ত সময় পার করছেন এর প্রতিষেধক আমাদের হাতে তুলে দেওয়ার জন্য। বিজ্ঞানীরা এটাও বলছেন, প্রতিষেধক আমাদের হাতে না পৌঁছানো পর্যন্ত নিজ নিজ শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো ছাড়া কিছুতেই আমরা বাঁচতে পারব না।

তাই সহজ ভাষায় জানার চেষ্টা করব, মাংস কিভাবে আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে মহামারী থেকে আমাদের রক্ষা করতে পারে। ইতালির রোম ভিত্তিক একটি অ্যাসোসিয়েশনের Carni sostenibilis নামক ওয়েবসাইটে প্রকাশিত আর্টিকেলে বলা হয়েছে, ‘যারা মাছ-মাংস খাওয়া ছেড়ে দেবে। তাদের শরীরে এন্টিবডির পরিমাণ কমে যাওয়ার ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে।’

সেখানে আরও বলা হয়, ‘তাদের রক্তে আয়রনের ঘাটতি দেখা দেবে। যা কি-না ইমুনোগ্লোবিউলিনের পরিমাণ কমিয়ে দেবে। এর পাশাপাশি প্রাণিজ আমিষ না খাওয়ার কারণে তার শরীরে জিঙ্ক, কপার ও ভিটামিন বি৬ কম পাবে। যা পরবর্তীতে শরীরে এন্টিবডি কমিয়ে দিতে ভূমিকা রাখে। যা করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার অস্ত্র কমিয়ে দেওয়ার নামান্তর।’

আরও একটি গবেষণায় দেখানো হয়েছে, প্রাণিজ আমিষ না খেলে রক্তে লোহিতকণিকা, শ্বেতকণিকা ও নিউট্রোফিল নামক সেনাবাহিনী ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে তাদের ফ্যাগোসাইটিক কার্য পরিচালনা কমার কারণে। ফ্যাগোসাইটোসিস হলো এমন একটি প্রক্রিয়া, যার মাধ্যমে রক্তকণিকা জীবাণুকে গিলে ফেলে।

ইউনিভার্সিটি অব গ্রেজ তাদের একটি ক্লিনিক্যাল স্টাডিতে দেখিয়েছে, যারা মাছ-মাংস খায় না; তাদের ডায়াবেটিসসহ হৃৎপিণ্ডের নানা রোগে ভোগার সম্ভাবনা বেশি। পাঠকবৃন্দ বুঝতেই পারছেন, কোভিড-১৯ এ মৃত্যুর আশঙ্কা এসব রোগে আক্রান্তদের ক্ষেত্রেই বেশি।

এবার আসি চিকেন মিটে- ব্রয়লার, সোনালি বা দেশি এসব মাংসে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন বি৬ রয়েছে। যা আমাদের শরীরের প্রয়োজনীয়তার অর্ধেক পূরণ করে। সরাসরি লোহিত ও শ্বেত রক্তকণিকা তৈরিতে সহায়তা করে।

সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো- ব্রয়লার তথা চিকেন মিট সম্পর্কে বিজ্ঞানীরা আজব এক তথ্য প্রকাশ করেছেন। যা বর্তমান ভাইরাসের মহামারী পরিস্থিতিতে এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। গবেষকরা দেখিয়েছেন, চিকেন মিট স্যুপ করে খেলে কোল্ড বা ফ্লু নামক রোগ থেকে ভালো প্রশান্তি পাওয়া যায়। করোনার ক্ষেত্রেও ডাক্তাররা বারবার গরম স্যুপ, কফি বা চা খেতে বলছেন।

সব শেষে একটি কথা বলতে চাই, গুজবে কান দেবেন না। ব্রয়লার মুরগি থেকে করোনা ছড়ায় না। বরং ব্রয়লার মুরগি হতে পারে ইমিউনিটি সিস্টেম বাড়ানোর পারফেক্ট সাপোর্টার।

লেখক: বিসিএস (প্রাণিসম্পদ), ডিভিএম, এমএস ইন এনিমেল অ্যান্ড পোল্ট্রি নিউট্রিশন, উপজেলা প্রাণিসম্পদ দফতর, বরিশাল সদর, বরিশাল।

-সময়ের সংলাপ২৪/ডি-এইচ

কোন মন্তব্য নেই: