ধর্মকে কটাক্ষ করে লেখা একটি বই প্রকাশ নিয়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে বিশ্বনাথে। এ নিয়ে কয়েক দফায় গ্রামবাসীর সাথে লেখকের উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। লেখকের নাম মো. আজম আলী। তিনি বিশ্বনাথের মরহুম হাজী শাহ মস্তকিন আলীর ছেলে। বাড়ী উপজেলার টেংরা গ্রামে। বই প্রকাশের পর থেকে দফায় দফায় গ্রামবাসীর বৈঠক হয়েছে। বৈঠক থেকে বিকৃত লেখার দায়ে আজম আলীকে গ্রেফতারের মাধ্যমে এলাকায় শান্তি শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার দাবি জানিয়েছেন গ্রামবাসী।
প্রকাশিত বইটির নাম ‘মনের খোরাক’। বইটির প্রকাশক হিসেবে দক্ষিণ সুরমার জালালপুর কাদিপুরের আতিকুর রহমানের নাম রয়েছে। প্রকাশিত বইটির ১৬ নং পৃষ্টায় নরসৃষ্টির প্রশ্নোত্তর পর্বে লেখক লিখেছেন- (যেখানে উত্তর দিয়েছেন লেখক নিজেই)
প্রশ্ন : আল্লাহ কোনরুপে ছিলেন ?
উত্তর :আল্লাহ ডিম্বরূপে ছিলেন।
প্রশ্ন : আল্লাাহ যখন ডিম্বরূপে ছিলেন, সেই ডিম্ব কোথা থেকে হয়েছিল ?
উত্তর : যে শক্তি জন্মেছিল, সেই শািক্তর গর্ভে ডিম্ব ছিল।
প্রশ্ন :শক্তি কি ছিল
উত্তর : শক্তি ছিলেন অদ্যাশক্তি ফাতেমা।
প্রশ্ন :শক্তির ডিম্বে কি ছিল, চোকলায় কি ছিল, পর্দায় কি ছিল, পানিতে কি ছিল এবং কুসুমে কি ছিল ?
উত্তর : চোকলায় ছিলেন ফাতেমা, পর্দায় ছিলেন হাসান-হোসেন, পানি ছিলেন হযরত আলী, এবং কুসুমে নিজে খোদা।
বইটির ৫০ নং পৃষ্ঠায় রয়েছে
প্রশ্ন : কোন পুরুষের স্তন ছিল
উত্তর : হযরত আলীর
প্রশ্ন : কোন রমনী এখনও আকাশে বাস করছেন ?
উত্তর : বিবি হাওয়ার
প্রশ্ন : কোন নবীর জন্ম নারিকেল থেকে ?
উত্তর : ডাইবেল নবীর জন্ম নারিকেল থেকে ।
১৭৬ পৃষ্টা সম্বলিত এই বইটিতে শুধু মুসলমান ধর্ম নয়, হিন্দু ধর্ম বিষয়েও নানা অযৌক্তিক, অবিশ্বাসযোগ্য এবং বিতর্কধর্মী লেখা প্রকাশ পেয়েছে। এনিয়ে বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসী কয়েক দফায় আজম আলীর সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত হতে চাইলে আজম আলীর পরিবারের মধ্যস্থতায় বিষয়টি শেষ হয়। অভিযুক্ত গ্রামবাসীর দাবি-ধর্মকে আঘাত করে কুরুচিপূর্ণ লেখা প্রকাশের মধ্য দিয়ে গ্রামের পাশাপাশি সারাদেশে সংঘাত ছড়িয়ে পড়বে। সুতরাং অপ্রীতিকর কোনো ঘটনা ঘটার আগেই প্রকাশিত বইটি বাজেয়াপ্ত করতে হবে। অন্যতায় গ্রামের সকল মানুষ মিলে আইনের আশ্রয় নিতে বাধ্য হবেন।
এ বিষয়ে হিন্দু, বৌদ্ধ ও খৃষ্টান ঐক্য পরিষদ নেতা হিমাংশু ভট্টাচার্য বলেন, এই বইটিতে লেখক রাধা কৃষ্ণের চরিত্রকে হনন করার চেষ্টা করেছেন। এর ফলে পরিস্থিতি অশান্ত হয়ে উঠবে। আমরা অচিরেই এ বিষয়ে করণীয় নির্ধারণ করে লেখকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
এ ব্যাপারে লেখক আজম আলীর ঘণিষ্ট আল জাহান বলেন, প্রকাশিত বইটি নিয়ে উত্তপ্ত গ্রামবাসীর সাথে মধ্যস্থতা করা হয়েছে। আশা করি এ বিষয়ে লেখক এবং গ্রামবাসী শান্তিপূর্ণ অবস্থানে থাকবেন।
লেখক আজম আলী বলেন, শুরুতে বিষয়টি অস্বিকার করলেও পরে বই প্রকাশ এবং বিকৃত লেখার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, আমার লেখা ঠিকই আছে। শুধু বুঝতে ভুল হয়েছে। আপনার সাথে পরে দেখা করবো বলে, লাইটি কেটে দেন।
তথ্য সূত্র→ Surmanews24.com
-সময়ের সংলাপ২৪/ডি-এইচ