সিলেটের ৬টি আসনে প্রার্থী বাছাইয়ে চমক আনছে প্রধান দুই জোটই। এই চমকের বলি হতে পারেন সিলেটের অন্তত ছয়জন বর্তমান ও সাবেক সাংসদ। এদের মধ্যে বর্তমান একজন মন্ত্রীও রয়েছেন।
আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টভুক্ত বিএনপির পক্ষ থেকে আগামী নির্বাচনে সিলেটের ৬টি আসনে কারা প্রার্থী হচ্ছেন তা ঘোষণা না দিলেও দুই জোটই চমকের আভাস দিয়েছে। আর বিভিন্ন সূত্র থেকে ইতোমধ্যে গণমাধ্যমে প্রকাশিত হচ্ছে কারা পাচ্ছেন এই দুই জোটের মনোনয়ন।
দেশের অন্যতম মর্যাদাপূর্ণ আসন সিলেট-১। এই আসনের মহাজোটের প্রার্থী হিসেবে এগিয়ে রয়েছেন সাবেক রাষ্ট্রদূত একে আবদুল মোমেন। আর ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী হতে পারেন প্রাইভেটাইজেন কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ইনাম আহমদ চৌধুরী। তবে সাবেক সাংসদ খন্দকার আব্দুল মুক্তাদিরের ছেলে, বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদিরও এই জোটের প্রার্থী হওয়ার লড়াইয়ে রয়েছেন বলে জানা গেছে।
এ আসনের বর্তমান সাংসদ অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। আওয়ামী লীগ তাকে আবার প্রার্থী করতে করতে আগ্রহী হলেও মুহিত নিজে আগ্রহী নন। রাজনীতি থেকে অবসর নিতে চান ৮৫ বছর বয়সী মুহিত। অনুজ মোমেনের প্রতিই সমর্থন মুহিতের।
সিলেট-২ আসনের বর্তমান সাংসদ জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ইয়াহইয়া চৌধুরী এহিয়া। মহাজোটের হিসেব নিকেশে এবার মনোনয়ন বঞ্চিত হতে পারেন এহিয়া। তাঁর বদলে এই আসনের সাবেক সাংসদ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরীর মনোনয়ন পাওয়ার সম্ভাবনাই অধিক বলে জানা গেছে।
সর্বশেষ নির্বাচনে এহিয়ার কারণে দলীয় মনোনয়ন বঞ্চিত হয়েছিলেন শফিকুর রহমান।
এ আসনের বিএনপির সর্বশেষ সাংসদ ইলিয়াস আলী দীর্ঘদিন ধরে নিখোঁজ রয়েছেন। ফলে ইলিয়াসের স্ত্রী বা ছেলের এখানে বিএনপির মনোনয়ন পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
সিলেট-৩ আসনের বর্তমান সাংসদ সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মাহমুদ-উস সামাদ কয়েস। আসন্ন নির্বাচনে তাকেও মনোনয়ন বঞ্চিত থাকতে হতে পারে। সিলেট-২ আসন জাতীয় পার্টির কাছ থেকে ফিরিয়ে এনে সিলেট-৩ আসন এরশাদের দলকে ছেড়ে দিতে চায় আওয়ামী লীগ। এ আসনে মহাজোটের প্রার্থী হতে পারেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য আতিকুর রহমান।
এই আসনে বিএনপির সর্বশেষ সাংসদ ছিলেন শফি আহমদ চৌধুরী। এবার তিনি মনোনয়ন নাও পেতে পারেন বলে জানা গেছে। শফির বদলে বিএনপির কেন্দ্রীয় আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার আব্দুস সালাম এ আসনে বিএনপির প্রার্থী হতে পারেন।
সিলেট-৪ আসনের বর্তমান সাংসদ ইমরান আহমদ আগামী নির্বাচনেও দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি। তবে পরিবর্তন আনছে বিএনপি। এই আসনে দলটির সর্বশেষ সাংসদ দিলদার হোসেন সেলিমের বদলে গোয়াইনঘাট উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল হাকিম চৌধুরীরই দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
সিলেট-৫ আসনে গত নির্বাচনে মহাজোটকে ছেড়ে দিয়েছিল আওয়ামী লীগ। এই আসন থেকে সাংসদ নির্বাচিত হয়েছিলেন জাতীয় পার্টির যুগ্ম মহাসচিব সেলিম উদ্দিন। ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনেও সেলিম উদ্দিনই হতে পারেন মহাজোটের প্রার্থী। ফলে বঞ্চিত থাকতে হবে ২০০৮ সালে এ আসনে নৌকা প্রতীকে সাংসদ নির্বাচিত হওয়া হাফিজ আহমদ মজুমদারকে।
সিলেট-৫ আসনটি বিএনপি এবারও জামায়াতকে ছেড়ে দিতে পারে। জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য মাওলানা ফরিদ উদ্দিন এ আসনে ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী হতে পারেন।
এবার সবচেয়ে বড় চমক আসতে পারে সিলেট-৬ আসনে। মনোনয়ন বঞ্চিত থাকতে হতে পারে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদকে। ওই আসনের বর্তমান সাংসদ নাহিদের বদলে সম্প্রতি বিকল্পধারায় যোগ দেওয়া সাবেক সচিব শমসের মবিন চৌধুরীর মহাজোটের প্রার্থী হতে পারেন বলে আলোচনা রয়েছে।
এই আসনটিও জামায়াতকে ছেড়ে দিবে বিএনপি। ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী হতে পারেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় শুরা সদস্য মাওলানা হাবীবুর রহমান।
-সময়ের সংলাপ২৪/ডি-এইচ