আন্তর্জাতিক ডেস্ক: মারণ এইডস প্রতিরোধে রঙিন ও সুগন্ধী কন্ডোম৷ তাও আবার ছাত্র-ছাত্রীদের হাতে তুলে দেওয়া হবে৷ এক্কেবারে বিনামূল্যে৷ শুধু তাই নয়, এই রঙ-বেরঙের সুগন্ধী গর্ভনিরোধক বিলি করবে খোদ সরকার৷ দেশে বেড়ে চলা এইচআইভি প্রতিরোধে এমনই দৃষ্টান্তমূলক সিদ্ধান্ত নিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা সরকার। সরকার চাইছে ছোটবেলা থেকেই এইচআইভি নিয়ে সতর্ক হোক পড়ুয়ারা।
মন্ত্রকের উপলব্ধি, বাজারচলতি কন্ডোমে অনেক ক্ষেত্রে ত্রুটি থেকে যায়৷ আবার দম্পতিদের মধ্যে বাজারচলতি কন্ডোম ব্যবহারে অনীহা দেখা যাচ্ছে৷ এরফলে বাড়ছে এইচআইভি আক্রান্তের সংখ্যা৷ তাই, সরকার স্থির করেছে সাধারণ মানুষের কাছে আকর্ষণ বাড়াতে সুগন্ধী রঙ-বেরঙের গর্ভনিরোধক বিলি করবে৷
পরিসংখ্যান বলছে, দক্ষিণ আফ্রিকার প্রায় ৬.৪ মিলিয়ন নাগরিক এইচআইভি পজিটিভ শরীরে বহন করছেন৷ তারা ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে৷ দক্ষিণ আফ্রিকার হিউম্যান সায়েন্সস রিসার্চ কাউন্সিলের (এইচএসআরসি) এক সমীক্ষায় বলছে, গত কয়েক বছরে ওই দেশে এইচআইভি পজিটিভ আক্রান্তের সংখ্যা হু হু করে বাড়ছে৷ তারা পরিসংখ্যান দিচ্ছে, ২০০৮ সালে এই রোগের আক্রান্তের বৃদ্ধির হার ছিল ১০.৬ শতাংশ৷ সেখানে ২০১২ সালে বৃদ্ধির হার হয়েছে ১২.২ শতাংশ৷ ওই দেশের নাগরিকের সংখ্যা ৫০ মিলিয়ন৷ সেখানে ৬.৪ মিলিয়ন নাগরিক বহন করছে এইচআইভি পজিটিভ৷ ২০০৮ সালে ৮৫ শতাংশ পুরুষ এবং ৬৬ শতাংশ মহিলা এই মারণরোগে বাহক ছিলেন৷ যা ২০১২ সালে গিয়ে আরও বৃদ্ধি পেয়েছে৷ তবে, বর্তমান আক্রান্তের মধ্যে ৭৫ শতাংশ মানুষের এখনও পর্যন্ত ঝুঁকি কম রয়েছে৷
এই সমীক্ষা এখন মাথাব্যথার কারণ দক্ষিণ আফ্রিকা সরকারের স্বাস্থ্যমন্ত্রকের৷ নানা উপায়ে এই রোগের প্রকোপ কমানোর চেষ্টা কার্যত বিফলে যাচ্ছে৷ ওই সমীক্ষার সূত্র ধরে দক্ষিণ আফ্রিকা সরকারের উপলব্ধি, ১৫ থেকে ২৪ বছর বয়সীরা এইচআইভি পজিটিভের সবচেয়ে বেশি বাহক৷ এই রোগ-প্রতিরোধে কন্ডোম ব্যবহারে চরম অনীহাকেই মূল দায় বলে মনে করছে স্বাস্থ্যমন্ত্রক৷
তাই, এবার অন্যপথ ধরে এগতে চাই তারা৷ কন্ডোম ব্যবহারে যৌনক্রিয়া করায় ছাত্রছাত্রীদের আগ্রহী করে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে৷ তাই চূড়ান্ত হয়েছে, ছাত্রছাত্রীদের হাতে তুলে দেওয়া হবে সুগন্ধী এবং রঙবেরঙের কন্ডোম৷ স্থাস্থ্যকর্তাদের ধারনা, ব্যাপক প্রচার ও সচেতনা শিবিরের মাধ্যমে এই সুগন্ধী কন্ডোমের কথা তুলে ধরা হবে৷ স্কুল, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে বিনামূল্যে বিলি করা হবে সুগন্ধী কন্ডোম৷ মনে করা হচ্ছে, গন্ধ এবং নানা রঙের হওয়ার কারণে ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে কন্ডোমের ব্যবহার বাড়বে৷ স্বাভাবিকভাবেই তাতে কমিয়ে আনা সম্ভব এইচআইভি পজিটিভের বাহকের হার৷
-সময়ের সংলাপ২৪/ডি-এইচ