ফাইনালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাংলাদেশের লাইনআপ কি হবে? বৃহস্পতিবার একই দলের বিপক্ষে মাত্র ৮২ রানে অলআউট হয়ে ১০ উইকেটে হারার পরও কি শনিবার ফাইনালে একই দল নিয়ে মাঠে নামবে বাংলাদেশ? নাকি দলে পরিবর্তন আসবে?
চার ম্যাচের একটিতেও সুবিধা করতে না পারা এনামুল হক বিজয় (১৯+৩৫+১+০ = ৫৫) কি ফাইনাল জয়ের মিশনে তামিম ইককালের সঙ্গী হবেন? নির্বাচকরা ও টিম ম্যানেজমেন্ট তার ওপরই আস্থা রাখবেন? নাকি ১৬ নম্বর সদস্য হিসেবে দলে ফিরিয়ে আনা ইমরুল কায়েসকে খেলানো হবে?
প্রশ্ন আরও আছে। ঘরোয়া ক্রিকেটে রানের ফোয়ারা ছোটালেও চলতি আসরে নিজেকে মেলে ধরতে না পারা নাসির (০+১+ ৩ = ৪) কি এত বাজে খেলার পরও একাদশে থাকবেন? তিন বছর পর দলে ফিরেও উইকেটশূন্য থাকা পেসার আবুল হোসেন রাজুকে এরপরও বিবেচনায় রাখা হবে?
ভক্ত ও সমর্থকদের বড় অংশের মনে এসব প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে প্রতিটি মুহূর্তে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে শেষ ম্যাচের পর থেকেই ক্রিকেট আঙ্গিনায় এ তিনজনকে নিয়েই নানা গুঞ্জন। বাংলাদেশের প্র্যাকটিস সেশন কাভার করতে যাওয়া সাংবাদিকদের মধ্যেও একাদশ নিয়ে অন্য যে কোন দিনের তুলনায় উৎসাহ-আগ্রহ ছিল অনেক বেশি।
ম্যাচের আগের দিন মানে ‘প্রিভিউ ডে‘তে প্রেস মিট শেষে সাধারণতঃ সাংবাদিকদের সাথে খানিকক্ষণ আলাপ বা আড্ডা দেন মাশরাফি। সেখানে অফ দ্য রেকর্ড বা খানিক রসিকতার ছলে কিছু কথা বলেও থাকেন; কিন্তু আজ অনেক বেশি সতর্ক-সাবধানী ছিলেন টাইগার অধিনায়ক। বলেই বসলেন, ‘আমি কিন্তু দল নিয়ে কিছু বলবো না। কাইন্ডলি কেউ একাদশ নিয়ে কিছু জানতেও চাইয়েন না।’
তবে সন্ধ্যার পর মিললো আসল খবর। টিম মিটিংয়ে চূড়ান্ত ফাইনালের দল। গত ২৫ জানুয়ারি শেরে বাংলায় খেলা একাদশে আসছে তিনটি পরিবর্তন। টিম ম্যানেজমেন্ট নিশ্চিত করেছে, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচের ভুল-ত্রুটি কাটিয়ে ওঠার পাশাপাশি ব্যাটিং ও বোলিংয়ের ছিদ্রগুলো ভরাটের চিন্তা থেকেই একাদশে বড় ধরনের রদ বদলের সিদ্ধান্ত নেয়া হচ্ছে।
পরপর চার ম্যাচে নিয়মিত সুযোগ পেয়েও অপরিহার্যতার প্রমাণ রাখতে না পারা ওপেনার এনামুল হক বিজয়কে ফাইনালে ড্রপ করা হচ্ছে। তার বদলে তামিম ইকবালের সাথে ওপেনিং পার্টনার হিসেবে বেছে নেয়া হচ্ছে মোহাম্মদ মিঠুনকে।
যদিও বৃহস্পতিবার রাতে ১৬ জনের দলে ফেরানো হয়েছিল ইমরুল কায়েসকে। কেউ কেউ ভেবেছিলেন, ইমরুলই বুঝি খেলবেন; কিন্তু অধিনায়ক মাশরাফি প্রেস ব্রিফিংেয়ে কথা বলতে গিয়ে এক পর্যায়ে বলে দেন, ‘ইমরুলকে দলে ফেরানো হয়েছে মানেই তাকে খেলানো হবে- তা ভাবা ঠিক হবে না।’
আর অফ ফর্মের কারনে বাদ যাচ্ছেন নাসির হোসেনও। তার জায়গা নেবেন অফস্পিনার মেহেদি হাসান মিরাজ। একই সঙ্গে আবুল হাসান রাজুরও কপাল পুড়ছে। ফাইনাল খেলা হচ্ছে না তারও। চতুর্থ পেসার হিসেবে খেলানো হবে সাইফউদ্দিনকে।
সংবাদ সম্মেলনে মাশরাফি একবার বলে ওঠেন, ‘আমরা কস্বিনেশন ঠিক রাখবো। তবে হয়ত ‘পার্সন’ (ব্যক্তি) বদল ঘটতে পারে।’ সেটাই হচ্ছে। শ্রীলঙ্কার সাথে রবিন লিগের দুই পর্বেই চার পেসার নিয়ে খেলেছে বাংলাদেশ। শনিবারও মাশরাফি, মোস্তাফিজ আর রুবেলের সাথে থাকছেন সাইফউদ্দিন।
আর নাসিরের জায়গায় মেহেদি হাসান মিরাজকে খেলানো হচ্ছে। নাসির দলে ছিলেন মূলতঃ ব্যাটসম্যানের তকমায়। পাশাপাশি তার অফস্পিনটাকেও বিবেচনায় আনা হয়েছিল; কিন্তু তিন ম্যাচে চার রান করার পর আর তার ওপর আস্থা রাখার সাহস পাচ্ছে না টিম ম্যানেজমেন্ট।
তাকে খেলানোর চেয়ে বরং মিরাজকে খেলালে লাভ হবে- তার বোলিংটা প্লাস। আর শেষ দিকে মিরাজের ব্যাট থেকেও কিছু রান আসে। সেই বিবেচনায় নাসিরের বিকল্প হয়েছেন মিরাজ।
সুতারং, ফাইনালের জন্য একাদশটা দাঁড়াচ্ছে এমন-
তামিম ইকবাল, মোহাম্মদ মিঠুন, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহীম, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, সাব্বির রহমান, মেহেদী হাসান মিরাজ, মাশরাফি বিন মর্তুজা (অধিনায়ক), সাইফউদ্দিন, রুবেল হোসেন ও মোস্তাফিজুর রহমান।
-সময়ের সংলাপ২৪/ডি-এইচ
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন