দেশের রাজনীতির এক অদৃশ্য চোখ থাকে সিলেট-১ আসনের দিকে। বলা হয়ে থাকে, জাতীয় নির্বাচনে এ আসনটিতে যে দলের প্রার্থী বিজয়মাল্য গলে পড়েন, সে দলই সরকার গঠন করে। অতীতে এ প্রচলিত কথার প্রমাণও মিলেছে।
আগামী জাতীয় নির্বাচনের হাওয়া এখন সিলেটেও বইছে। সিলেটের ছয়টি আসনের সম্ভাব্য প্রার্থীদের নিয়ে চলছে নানা কানাঘুষা। বিশেষ করে সিলেট-১ আসনে আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থীদের নিয়ে নানামুখী আলোচনা এখন সর্বত্র।
মর্যাদাপূর্ণ সিলেট-১ আসনে আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থীদের তালিকায় রয়েছেন পাঁচজন। বর্তমান সাংসদ আবুল মাল আবদুল মুহিত, তাঁর ছোট ভাই ও জাতিসংঘে বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত এ কে মোমেন, দলটির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ আছেন মূল আলোচনায়। এঁদের বাইরে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর হবিগঞ্জের ড. ফরাসউদ্দিন ও সাবেক নির্বাচন কমিশনার সিলেটের কাজীটুলার বাসিন্দা ছহুল হোসাইনও আলোচনায় আছেন লোকমুখে। আওয়ামী লীগ ‘চমক’ হিসেবে এ দু’জনের যে কাউকে নির্বাচনী লড়াইয়ে নামাতে পারে, এমন গুঞ্জনও রয়েছে।
নির্বাচন করা না করা নিয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বিভিন্ন সময়ে নিজের অবস্থান পাল্টাচ্ছেন। একসময় তিনি নিজেই বলেছিলেন, আগামী জাতীয় নির্বাচনে তিনি প্রতিদ্বন্দ্বীতায় নামবেন না। সিলেট-১ আসনে আওয়ামী লীগদলীয় প্রার্থী হিসেবে ড. মোমেনকেই পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। এরপর ড. মোমেন সিলেটের রাজনীতিতে সক্রিয় হতে থাকেন। বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক অনুষ্ঠানে নিয়মিতই অংশগ্রহণ করতে থাকেন তিনি।
কিছুদিন আগে নিজের অবস্থান পাল্টে মুহিত একটি জাতীয় গণমাধ্যমকে বলেন, ‘খালেদা জিয়া যদি সিলেট-১ আসনে নির্বাচন করেন, তবে আমিও প্রতিদ্বন্দ্বীতা করবো।’ এর ক’দিন পরে সিলেটে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে অর্থমন্ত্রী সিলেট-১ আসন থেকে পুনরায় নির্বাচন করার আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
সর্বশেষ, গতকাল শুক্রবার এক সাক্ষাতকারে মুহিত বলেছেন, বয়স হলেও ‘দলের প্রয়োজনে’ তিনি আবারও জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেবেন।
‘যদি দলের প্রয়োজন হয়, আমি আছি। আমার জন্য একটু কষ্ট হবে। কারণ বয়স বাড়ছে, এনার্জি কমছে। যতোদিন সামর্থ্য আছে, ততোদিনই দলের জন্য কাজ করে যাবো।’
অর্থমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের পর সিলেট-১ আসনে আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থীদের ঘিরে গুঞ্জনের পালে নতুন হাওয়াই লাগছে। অর্থমন্ত্রী নিজেই যদি নির্বাচন করবেন, তবে ঠিক কি কারণে তাঁর ছোট ভাই ড. মোমেনকে প্রার্থী হিসেবে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন-এমন প্রশ্নও ওঠছে রাজনৈতিক অঙ্গনে। এছাড়া অর্থমন্ত্রীর এমন অবস্থানের প্রেক্ষিতে সিলেট-১ আসনে নির্বাচন করতে আগ্রহী মিসবাহ উদ্দিন সিরাজের পদক্ষেপ কি হবে, তাও দেখার বিষয় বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
আওয়ামী লীগের টানা তিনবারের সাংগঠনিক সম্পাদক মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ বেশ কয়েকবার সিলেট-১ আসনে নির্বাচন করার আগ্রহ ব্যক্ত করেছেন। সম্প্রতি আওয়ামী লীগের সিলেট বিভাগীয় তৃণমূল প্রতিনিধি সম্মেলনে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের উপস্থিতিতেও তিনি এ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন।-সময়ের সংলাপ24/ডি-এইচ