মাদারীপুরে কলেজশিক্ষক হত্যাচেষ্টা: আটক ফাহিম হিযবুত তাহরীরের সাথে জড়িত- পুলিশ - সময়ের সংলাপ24
DHAKA WEATHER

Post Bottom Ad

খুব শীগ্রই আমরা Somoyersonglap24.com ওয়েবসাইট নিয়ে আসছি..

মাদারীপুরে কলেজশিক্ষক হত্যাচেষ্টা: আটক ফাহিম হিযবুত তাহরীরের সাথে জড়িত- পুলিশ

Share This
ফয়জুল্লাহর বাবা ওমর ফারুক বলেন, তাঁর ছেলে হিযবুত তাহ্রীর বা অন্য কোনো সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত কি না, তা তিনি জানেন না। তবে ধর্মীয় বই-পুস্তক পড়ত। শিবির ও তাবলিগের বিরুদ্ধে বলত।

তাহলে কোন উদ্দেশ্যে মনিরুলরা শিবির মোসাদ ফিকশন বানালো?

সারা দেশে ধারাবাহিক হত্যা ও হামলার জন্য পুলিশ মূলত দুটি জঙ্গি সংগঠন জেএমবি ও আনসারুল্লাহ বাংলা টিমকে দায়ী করে আসছে। এখন মাদারীপুর পুলিশ বলছে, সেখানকার কলেজশিক্ষককে হত্যার চেষ্টার ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া গোলাম ফয়জুল্লাহ ফাহিম (১৯) নিষিদ্ধ আরেক সংগঠন হিযবুত তাহ্রীরের সঙ্গে যুক্ত।

মাদারীপুরের পুলিশ সুপার সারওয়ার হোসেন গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে ফয়জুল্লাহ বলেছেন যে তিনি হিযবুত তাহ্রীরের সঙ্গে জড়িত। এ ধরনের হামলায় হিযবুত তাহ্রীরের কোনো সদস্য আটক হওয়ার এটা প্রথম ঘটনা। 
এদিকে গত বুধবার মাদারীপুরের কলেজশিক্ষক রিপন চক্রবর্তীকে হত্যাচেষ্টা মামলায় ফয়জুল্লাহকে গতকাল ১০ দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। এর আগের দিন বৃহস্পতিবার এ ঘটনায় মাদারীপুর সদর থানায় ফয়জুল্লাহসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা করে পুলিশ। বাকি পাঁচ আসামি হলেন সালমান তাকসিন ওরফে আবুল হোসেন ওরফে সালিম (১৯), শাহরিয়ার হাসান ওরফে পলাশ (২২), জাহিন (২৩), রায়হান (২৪) ও মেজবাহ (২৪)। পুলিশ জানায়, ফয়জুল্লাহর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বাকি পাঁচজনকে আসামি করা হয়েছে। 
মামলার এজাহারে বলা হয়, ফয়জুল্লাহর ছবি বরিশালে চিকিৎসাধীন আহত শিক্ষককে দেখানো হয়। তিনি ফয়জুল্লাহকে হামলাকারী হিসেবে শনাক্ত করেন। হামলায় ফয়জুল্লাহর সঙ্গে অংশ নেন সালিম ও পলাশ। জাহিন, রায়হান ও মেজবাহ বাসার বাইরে পাহারায় ছিলেন। 
মাদারীপুর সদর থানার ওসি জিয়াউল মোর্শেদ প্রথম আলোকে বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ফয়জুল্লাহর দেওয়া অধিকাংশ তথ্যই ছিল বিভ্রান্তিকর। তাঁর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে পুলিশ অভিযান চালায়। 
গত বুধবার বিকেলে মাদারীপুর সরকারি নাজিমউদ্দীন কলেজের প্রভাষক রিপন চক্রবর্তীকে তাঁর বাসায় ঢুকে দুর্বৃত্তরা কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা করে। এ সময় তাঁর চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে দুর্বৃত্তরা পালাতে থাকে। তখন জনতা ধাওয়া করে ফয়জুল্লাহকে আটক করে পুলিশে দেয়। 
ঢাকার দক্ষিণখানের বাসিন্দা ফয়জুল্লাহ উত্তরা হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে চলতি বছর এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেন। মামলার তদন্তসংশ্লিষ্ট একাধিক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ওই কলেজের সাবেক এক ছাত্রের মাধ্যমে ফয়জুল্লাহ উগ্রপন্থায় উদ্বুদ্ধ হন। সংগঠনের নেতাদের নির্দেশে গত শনিবার দক্ষিণখানের বাসা থেকে বের হন ফয়জুল্লাহ। মঙ্গলবার পর্যন্ত তিনি ঢাকাতেই ছিলেন। এ সময় ঢাকার একটি এলাকায় ফয়জুল্লাহসহ কয়েকজনকে চাপাতি দিয়ে মানুষ হত্যার প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। পরে কলেজশিক্ষক রিপন চক্রবর্তীকে হত্যার নির্দেশনা পাওয়ার পর গত বুধবার ফয়জুল্লাহসহ তিনজন মাদারীপুরে যান। ওই দিন সকাল ১০টার দিকে তাঁরা মাদারীপুরের টেকেরহাট এলাকায় নিজেদের ব্যবহৃত মুঠোফোনগুলো ফেলে দেন। তারপর মাদারীপুর পুলিশ লাইনস মসজিদে তাঁরা জোহরের নামাজ পড়েন। নামাজ শেষে হামলার উদ্দেশ্যে বের হন। বিকেলে তাঁরা শিক্ষকের বাসায় ঢুকে হামলা চালান। 
ফয়জুল্লাহর বাবা ওমর ফারুক গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর ছেলে হিযবুত তাহ্রীর বা অন্য কোনো সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত কি না, তা তিনি জানেন না। তবে ধর্মীয় বই-পুস্তক পড়ত। শিবির ও তাবলিগের বিরুদ্ধে বলত। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে মাঝে মাঝে ধর্মীয় বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তর্ক করত। তিনি বলেন, ফয়জুল্লাহ তেমন কারও সঙ্গে মিশত না। বেশির ভাগ সময় দরজা বন্ধ করে নিজের কক্ষে থাকত। মুঠোফোনে ফেসবুক দেখত, এ জন্য বকাও খেয়েছে।
ওমর ফারুক বলেন, ফয়জুল্লাহ এলাকার মসজিদে নামাজ পড়ত। তবে কিছুদিন ধরে উত্তরা ৬ নম্বর সেক্টরে গিয়ে জুমার নামাজ পড়ত। একটি ছেলের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ ছিল, ওই ছেলে দু-একবার বাসায়ও এসেছিল। তবে তার নাম-পরিচয় জানেন না বলে দাবি করেন ওমর ফারুক।

কোন মন্তব্য নেই: