হবিগঞ্জ : সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কৌশিক আহমেদ খোন্দকারের আদালতে চার শিশুর হত্যার দায় স্বীকার করলেন আব্দুল আলী বাগালের ছেলে রুবেল মিয়া।
শুক্রবার রাতে হবিগঞ্জ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কৌশিক আহমেদ খোন্দকারের আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দীকালে হত্যার দায় স্বীকার করেন। এর আগে এ ঘটনায় আটক করা হয় আব্দুল আলী, তার ছেলে রুবেল, একই এলাকার বাচ্চু ও আরজুকে।
তদন্তের স্বার্থে একজনের নাম প্রকাশ করেনি পুলিশ। তখন বাহুবল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোশারফ হোসেন তাদের ৫ জনকে আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, নিহত শিশু মনিরের বাবা আফজাল মিয়া তালুকদারের সাধারণ ডায়রির পরিপ্রেক্ষিতে বাহুবল থানা পুলিশ ও র্যাব তাদের আটক করে।
এদিকে চার শিশুকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছিল বলে নিশ্চিত করেছিলেন চিকিৎসকরা। হবিগঞ্জ জেলা আধুনিক হাসপাতালে নিহত চার শিশুর ময়নাতদন্ত শেষে বুধবার বিকেল ৪টায় হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালের আরএমও ডা. দেবাশিষ দাস ও ডাক্তার আবু নাঈম হাসান গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
এদিকে সন্তান হারানোর শোকে সুন্দ্রাটিকি গ্রামের চার পরিবারে চলছে শোকের মাতম। বাড়িগুলোতে চলছে আহাজারি-বিলাপ। পরিবারের সদস্যদের সান্ত্বনা দিতে এসে চোখ ভিজে উঠছে আগত প্রতিবেশীদের।
এদিকে শুক্রবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন হবিগঞ্জ-সিলেট সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য আমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরী।
তিনি সাংবাদিকদের বলেন, প্রশাসনের পক্ষ থেকে পরিবারগুলোকে স্বাস্থ্যসেবা দেয়া হচ্ছে। সার্বক্ষণিক চিকিৎসক রাখা হয়েছে তাদের সেবায়। প্রয়োজনীয় ওষুধ আর সেলাইনও সরবরাহ করা হচ্ছে।
এর আগে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে এসে মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি আশ্বাস দিয়েছেন, সুন্দ্রাটিকি গ্রামের শিশু হত্যাকারীদের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে হবে।
নিহত শিশুরা হলো স্থানীয় আবদাল মিয়া তালুকদারের ছেলে মনির মিয়া (৭), ওয়াহিদ মিয়ার ছেলে জাকারিয়া আহমেদ শুভ (৮), আব্দুল আজিজের ছেলে তাজেল মিয়া (১০) এবং আব্দুল কাদিরের ছেলে ইসমাইল হোসেন (১০)।
মনির সুন্দ্রাটেকি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রথম শ্রেণিতে এবং তার দুই চাচাত ভাই শুভ ও তাজেল একই স্কুলে দ্বিতীয় ও চতুর্থ শ্রেণিতে পড়তো। তাদের প্রতিবেশী ইসমাইল ছিল সুন্দ্রাটেকি মাদ্রাসার ছাত্র।