ঢাকা : বিএনপির নয়াপল্টনের সমাবেশ ঘিরে ব্যাপক শোডাউনের প্রস্তুতি নিয়েছে দলটি। শেষ মুহূর্তে অনুমতি পেলেও সমাবেশকে মহাসমাবেশে পরিণত করার টার্গেট নিয়েছে তারা। নিজেদের শক্তির জানান দিতে সমাবেশে তিন লক্ষাধিক লোকের সমাগম ঘটাতে চায়।
এ লক্ষ্যে ঢাকা মহানগর বিএনপি, অঙ্গ-সহযোগী সংগঠন ও ঢাকার পার্শ্ববর্তী জেলাগুলোর নেতাদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনাও দেয়া হয়েছে। তারাও সমাবেশ সফলে জনসমাগমের প্রস্তুতি সেরেছেন।
দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান বাংলামেইলকে বলেছেন, ‘বিশাল জনসমাগমের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। তবে এটা সরকারের আচরণের ওপর নির্ভর করছে। সরকার যদি সমাবেশে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে তাহলে এক ধরনের পরিস্থিতি আর যদি প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি না করলে বিশাল জনসমাগম হবে।’
তবে ঠিক কত লোকের টার্গেট তা সরাসরি বলেননি মাহবুবুর রহমান। জানান, ‘সর্বোচ্চ জনসমাগম ঘটানোর চেষ্টা চলছে’।
দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর ৫ জানুয়ারিকে ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ হিসেবে অভিহিত করে আসছে বিএনপি। নির্বাচনের দ্বিতীয় বর্ষপূর্তি আজ। প্রথম বর্ষপূর্তিতে তাদের সমাবেশের অনুমতি দেয়া না হলেও এবার নয়াপল্টনে শর্তসাপেক্ষে অনুমতি দেয়া হয়েছে।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) পক্ষ থেকে গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় বিএনপিকে নয়াপল্টনে সমাবেশের অনুমতি দেয়া হয়। এর পর ডিএমপির পক্ষ থেকে শর্তসাপেক্ষে সমাবেশের অনুমতি দেয়া হয়। আজ (মঙ্গলবার) দুপুর ২টায় সমাবেশ শুরু হবে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে সমাবেশে দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া প্রধান অতিথির ভাষণ দেবেন। সমাবেশের ব্যাপ্তি হবে বাঁয়ে নাইটিঙ্গেল মোড় আর ডানে ফকিরাপুল মোড় পর্যন্ত।
বিএনপি সমাবেশে তিন লক্ষাধিক লোকের সমাগম ঘটিয়ে নিজেদের শক্তিমত্তার জানান দিতে চায়। এ লক্ষ্যে ঢাকা মহানগর বিএনপি, ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও মহিলা দলের ওপর নির্ভর করছে বিএনপি। পাশাপাশি ঢাকার পার্শ্ববর্তী পাঁচটি জেলা নারায়ণগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, গাজীপুর ও নরসিংদী থেকেও নেতাকর্মী আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
সমাবেশ সফলে বেগম খালেদা জিয়া সোমবার রাতে তার গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। বৈঠকে সমাবেশ সফল করতে সবাইকে সক্রিয় ও সতর্ক থাকার পাশাপাশি নিজ নিজ অবস্থান থেকে সর্বোচ্চ জনসমাগম ঘটানোর ওপর জোর দেয়া হয়েছে।
গতকাল দুপুরে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঢাকা মহানগর এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাদের নিয়ে যৌথসভা করেন দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী আহমেদ বাংলামেইলকে জানিয়েছেন, ‘শেষ মুহূর্তে অনুমতি পেলেও সমাবেশ সফলের জন্য আমাদের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। দলের নেতাকর্মীরা সুশৃঙ্খল ও স্বতঃস্ফূর্তভাবে সমাবেশে যোগ দেবেন। আশা করি, গণতন্ত্রের স্বার্থে সরকার কোনো প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করবে না।’
মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক শিরীন সুলতানা বলেন, ‘মহিলা দলের পক্ষ থেকে আমরা প্রস্তুতি সভা করেছি। নেতাকর্মীদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনাও দেয়া হয়েছে। আশা করি, সমাবেশে মহিলা দলের সর্বোচ্চ সংখ্যক নেতাকর্মীর উপস্থিতি নিশ্চিত করতে পারব।’
যুবদলের সহ-দপ্তর সম্পাদক কামরুজ্জামান দুলাল বলেন, ‘সমাবেশ সফলে যুবদলের ৫০ হাজার নেতাকর্মী সমাগমের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।’
স্বেচ্ছাসেবক দলের দপ্তর সম্পাদক আক্তারুজ্জামান বাচ্চু বলেন, ‘কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দল ও মহানগর উত্তর-দক্ষিণ মিলিয়ে সমাবেশে ৫০ হাজার নেতাকর্মীর সমাগম ঘটানো সম্ভব হবে।’
ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক নাজমুল হাসান বলেন, ‘দীর্ঘদিন পর ঢাকার রাজপথে বিএনপির বড় ধরনের শোডাউন হতে যাচ্ছে। এতে ছাত্রদলের সর্বোচ্চ উপস্থিতি থাকবে। আমাদের ৪০ থেকে ৫০ হাজার নেতাকর্মী উপস্থিত থাকবে।’
সময়ের সংলাপ24/জাতীয়/দিলোয়ার হোসেন