কোনভাবেই সিলেটে মানুষের মাঝে করোনা নিয়ে আতংক কাটছে না। সারা বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে সিলেটেও বাড়ছে করোনার ভয়। সিলেট শহীদ শামসুদ্দিন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন আশঙ্কাজনক একজন। যদিও তার ফলাফল এখনো আসেনি সিলেটে। এদিকে বৃহস্পতিবার সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারে এক ওমান প্রবাসীর মৃত্যু ও তাহিরপুরে করোনার উপসর্গ নিয়ে অপর এক ব্যক্তির লাশ দাফনকে কেন্দ্র করে বৃহত্তর সিলেটের মানুষ এক উদ্বিগ্ন।
সিলেটে এখন পর্যন্ত কেউ করোনা আক্রান্ত হয়নি। তবে সময় যত গড়িয়ে যাচ্ছে মানুষের মাঝে করোনার ভয় বাড়ছে পাল্লা দিয়ে। সিলেটের শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালে করোনা ইউনিটে চিকিৎসাধীন রয়েছেন একজন। ডাক্তাররা জানিয়েছেন, তিনি অনেকটা আশঙ্কাজনক অবস্থায় রয়েছেন। এতে সিলেটের মানুষ এই রোগীর রিপোর্টের অপেক্ষায় রয়েছেন। হাসপাতালে ভর্তি আশঙ্কাজনক এই রোগীর রিপোর্ট শুক্রবার আসার কথা।
এদিকে গতকাল বৃহস্পতিবার সুনামগঞ্জে দোয়ারবাজার উপজেলায় নিজের বাড়িতে কোয়ারেন্টিনে থাকা অবস্থায় জয়নাল আবেদীন (৪৯) নামের এক প্রবাসীর মৃত্যু হয়েছে। তিনি গত মার্চে বাড়িতে আসেন। পরিবার ও স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, জয়নালের করোনাভাইরাসের কোনো উপসর্গ ছিল না। বৃহস্পতিবার সকালে হঠাৎ করে তাঁর পেটব্যথা শুরু হয়। পরে হাসপাতালে নেওয়ার প্রস্তুতিকালে তিনি মারা যান।
জয়নাল আবেদীন দোয়ারাবাজার উপজেলার মান্নারগাঁও ইউনিয়নের জলালপুর গ্রামের বাসিন্দা। সকাল সাড়ে সাতটার দিকে তিনি নিজ বাড়িতে মারা যান।
পরিবার ও উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, জয়নাল আবেদীন দুই বছর ওমানে ছিলেন। সর্বশেষ সেখানে দুই মাস জেলে থাকার পর গত ১৮ মার্চ তিনি দেশে আসেন। বাড়িতে আসার পর থেকে তিনি হোম কোয়ারেন্টিনে ছিলেন। আজ সকালে হঠাৎ করে তাঁর পেটে ব্যথা শুরু হয়। তাৎক্ষণিক গ্রামের একজন পল্লি চিকিৎসককে ডেকে আনেন পরিবারের লোকজন। পল্লি চিকিৎসক তাঁকে কিছু ওষুধ দিয়ে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেন। পরিবারের লোকজন তাঁকে হাসপাতালে নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। এ অবস্থায় সকাল সাড়ে সাতটার সময় তিনি মারা যান।
যদিও এই প্রবাসীর শরীরে করোনার উপসর্গ ছিলোনা, কিন্তু এ নিয়ে মানুষের মাঝে দুশ্চিন্তার শেষ নেই।
এছাড়া বৃহত্তর সিলেটে সবচেয়ে বেশি আলোচনার জন্ম দিয়েছে সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার মাহতাবপুর গ্রামের জহিরুলকে নিজ এলাকার কবরস্হানে দাফন করা নিয়ে। তিনি জ্বর, সর্দি, কাশিতে মৃত্যু বরণ করেন ঢাকার একটি হাসপাতালে।
বৃহস্পতিবার (২ এপ্রিল) রাত সাড়ে ৮টায় দাফন করেন তার স্বজনরা । জহিরুল (২২) তাহিরপুর উপজেলার বালিজুড়ি ইউনিয়নের মাহতাবপুর গ্রামের কাফিল উদ্দিনের ছেলে। গত দুই বছর ধরে সে গাজীপুরে একটি গার্মেন্টেন্সে চাকরি করতো।
জহিরুলের পরিবারের সদস্যরা জানান, গত সপ্তাহখানেক সময় ধরে সে জ্বর, সর্দি, কাশিতে ভুগছিল। সেখানে একটি হাসপাতালে চিকিৎসারত অবস্থায় বুধবার সন্ধ্যা ৭টায় তার মৃত্যু হয়। বৃহস্পতিবার সন্ধায় তার মরদেহ গাজীপুর থেকে সিলেট কোম্পানীগঞ্জের বালুচর গ্রামের কুলসুমা ও মালিক উস্তার নামে দুইজন মাহতাবপুর গ্রামে নিয়ে আসেন।
সংবাদ পেয়ে তাহিরপুর থানা পুলিশ ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসকগণ মাহতাবপুর গ্রামে যান। জহিরুলকে যারা গাজীপুর থেকে বাড়ি নিয়ে আসেন এবং লাশ ধোয়ানোর কাজ করেন এমন ৭ জনকে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার নির্দেশনা দিয়ে ৭ বাড়িতে লাল নিশানা টাঙ্গিয়েন দেন তারা।
তাহিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ইউএইচএফপিও ডা. ইকবাল হোসেন বলেন, তিনি ঢাকায় যোগাযোগ করেছেন। তারা নির্দেশনা দিয়েছেন লাশের সাথে সংশ্লিষ্ট সবাইকে আগামী দুই সপ্তাহ হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার। -সিলেটভিউ২৪ডটকম
-সময়ের সংলাপ২৪/ডি-এইচ
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন