বিনম্র শ্রদ্ধা আর ভালোবাসায় মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মদানকারী শহীদ এবং সম্ভ্রম হারানো মা-বোনদের স্মরণ করছে সমগ্র জাতি। বিজয় দিবসের প্রথম প্রহর থেকে শুরু করে নানা আয়োজনে উদ্যাপিত হচ্ছে দিনটি।
সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) সকাল থেকে লাল সবুজের পতাকা আর রং-বেরঙের ফুল হাতে সর্বস্তরের মানুষের ঢল নামে সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে।
এর আগে সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৬টার পর রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে সেই মুক্তিসেনাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।
এসময় কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী। বিউগলে বেজে ওঠে করুণ সুর। রাষ্ট্রীয়ভাবে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে আওয়ামী লীগ সভাপতি হিসেবে দলের নেতাকর্মীদের নিয়ে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এরপর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, তিন বাহিনীর প্রধান এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা।
সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) সকাল ৮টার দিকে ঢাকার ধানমণ্ডির ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান প্রধানমন্ত্রী। এরপর একে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে সকাল ৭.১৫ টায় রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সের স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ বীর পুলিশ সদস্যদের প্রতি ফুলেল শ্রদ্ধা নিবেদন করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এমপি।
এসময় শহীদদের স্মৃতিতে পুস্পস্তবক অর্পণ করেন বাংলাদেশ পুলিশের ইন্সপেক্টর জেনারেল ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বিপিএম (বার), ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোহাঃ শফিকুল ইসলাম বিপিএম (বার), বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস এসোসিয়েশন, বাংলাদেশ পুলিশ উইমেন নেটওয়ার্ক ও বাংলাদেশ পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতি (পুনাক)।
শ্রদ্ধা নিবেদনকালে বিউগলে বাজানো হয় জাতীয় সংগীত। এসময় ডিএমপি’র একটি চৌকস দল গার্ড অব অনার প্রদান করে বীর শহীদদের সম্মান জানান। এসময় বাংলাদেশ পুলিশের ঢাকাস্থ সকল ইউনিটের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর ঢাকার ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে (সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) বর্বর পাকিস্তানি বাহিনী হাতের অস্ত্র সমর্পণ করে। সেইদিনে তারা মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে ছিল অকুতোভয় বীর বাঙালির সামনে।
পরাজয়-সনদে স্বাক্ষর করে হার মেনেছিল। গৌরবের ও আনন্দের এই বিজয় অর্জনে ঝরেছে এক সাগর রক্ত। সম্ভ্রম গেছে লাখ লাখ মা-বোনের। আনন্দের পাশাপাশি তাই এদিন বাঙালির মনে বিষাদও থাকবে অনেক ব্যথা আর কষ্টের।
স্বাধীনতার এই অর্ধশতকে দুর্বার গতিতে সম্মুখপানে এগিয়ে চলেছে বাংলাদেশ। এরই মধ্যে মধ্য-আয়ের দেশের মর্যাদায় সমাসীন হয়েছি আমরা। রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে নিজেদের অর্থে তরতর করে দাঁড়িয়ে যাচ্ছে পদ্মাসেতুর মতো বৃহৎ প্রকল্প।
এতে করে বিশ্ববাসীর কাছে এই খবর পৌঁছেছে যে বাংলাদেশ সক্ষম- সেই সক্ষমতা দেখিয়েছে দেশটি। আজ বাংলাদেশ স্বাস্থ্যসেবা, পরিবেশ সুরক্ষা, মাতৃ ও শিশুমৃত্যু হার হ্রাসসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোকেও পেছনে ফেলেছে। এ ছাড়া অত্যাধুনিক তথ্যপ্রযুক্তির ছোঁয়ায় গ্রাম-শহরের মধ্যে বৈষম্য কমিয়ে এনেছে।
-সময়ের সংলাপ২৪/ডি-এইচ
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন