পা ব্যথার কারণে রাতে অনেকেই ঠিকমতো ঘুমাতে পারেন না। সারাদিন ব্যথা কম থাকলেও রাত হলেই এই ব্যথা বেড়ে যায়। কখনো ব্যথার তীব্রতা এতই বেড়ে যায় যে পেশি শক্ত হয়ে ওঠে। কিন্তু কেন হয় এই ব্যথা।
পানিশূন্যতা: রাতে পা ব্যথার আরেকটি কারণ হতে পারে পানিশূন্যতা। পানির অভাবে রক্তে ‘ইলেকট্রোলাইট’য়ের ভারসাম্যে তারতম্য দেখা দেয়, ফলে ব্যথা হয়। তাই রাতে পা ব্যথা হলে পানি পান করতে পারেন। আক্রান্ত স্থানে মালিশ করা উচিত নয়।
বার্ধক্য: পঞ্চাশোর্ধ বয়সে নিয়মিত পা ব্যথা হলে তা বার্ধক্যজনিত জটিলতার কারণেই হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। বয়স পঞ্চাশের কাছাকাছি পৌঁছালে নড়াচড়ার সঙ্গে সম্পর্কিত স্নায়ুগুলো নষ্ট হতে থাকে। ফলে ব্যথা হওয়াটাই স্বাভাবিক বিষয়ে পরিণত হয়।
পুষ্টির অভাব: এই ধরনের ব্যথার একটি বড় কারণ প্রয়োজনীয় পুষ্টির অভাব। ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ও পটাশিয়াম শরীরে যাতে পর্যাপ্ত পরিমাণে থাকে সেদিকে যতœবান হতে হবে।
ব্যায়াম: ব্যায়ামাগারের রুটিনে যেদিন আপনার ‘লেগ ডে’ অর্থাৎ পায়ের ব্যায়ামের প্রতি মনোযোগ বেশি সেদিন রাতে পা ব্যথা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। ‘কারেন্ট স্পোর্ট মেডিসিন রিপোর্টস’ নামক জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণায় বলা হয়, কোনো নির্দিষ্ট পেশি বেশি ব্যবহারের কারণে তা অবসাদগ্রস্ত হয়ে গেলে সেখানে ব্যথা হতে পারে।
দাঁড়িয়ে থাকা: দিনের বেশির ভাগ সময় যদি দাঁড়িয়ে কাটে তবে সেদিন রাতে পা ব্যথা হওয়াটা বেশ স্বাভাবিক বিষয়। এর একটি কারণ হতে পারে, দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থাকলে শরীরের নিচের অংশে তরল ও রক্ত জমতে থাকে, ফলে শরীরের তরলের ভারসাম্য নষ্ট হয় এবং ব্যথা হয়।
স্বাস্থ্যগত জটিলতা: বাত, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, এমনকি হতাশা থেকেও পা ব্যথা হতে পারে। গবেষণা বলে, এই জটিলতাগুলো স্নায়ুতে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে, ফলে পায়ে ব্যথা হয়।
গর্ভাবস্থা: আপনি যদি গর্ভবতী হন তবে হয়তো আপনার রক্ত সঞ্চালনে সমস্যা হচ্ছে কিংবা ওজন বাড়ার কারণে পায়ে ব্যথা হচ্ছে। আমেরিকান প্রেগন্যান্সি অ্যাসোসিয়েশনের মতে, গর্ভে থাকা বাড়ন্ত শিশুর কারণে মায়ের স্নায়ুর ওপর যে চাপ পড়ে তা থেকেও পায়ে ব্যথা হতে পারে।
ঋতু পরিবর্তন: ইউনিভার্সিটি অব অ্যালবার্টার ‘ফ্যামিলি মেডিসিন’ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. স্টক গ্যারিসন জানান, গ্রীষ্ম ও শীতকালে এমন ব্যথা বেশি দেখা দেয়। এর কারণ স্নায়ুজনিত সমস্যা, পেশির সমস্যা নয়। গ্রীষ্মকালে ভিটামিন ডি’র মাত্রা বেশি থাকে বলে স্নায়ুর বৃদ্ধি ও ক্ষয়পূরণ বেশি সক্রিয় হয়। ভিটামিন ডি সর্বোচ্চ মাত্রায় পৌঁছালে এই প্রক্রিয়া অত্যন্ত দ্রুত হয়, ফলে ব্যথা হতে পারে।
-সময়ের সংলাপ২৪/ডি-এইচ