বন্ধুদের নিয়ে প্রেমিকাকে গণধর্ষণ, পরে হত্যা - সময়ের সংলাপ24
DHAKA WEATHER

Post Bottom Ad

খুব শীগ্রই আমরা Somoyersonglap24.com ওয়েবসাইট নিয়ে আসছি..

বন্ধুদের নিয়ে প্রেমিকাকে গণধর্ষণ, পরে হত্যা

Share This

মাত্র ২ হাজার টাকা পাওয়ার লোভে প্রেমিকাকে চার বন্ধুর হাতে তুলে দিয়েছে এক ভণ্ড প্রেমিক। এরপর পাঁচজন মিলে ধর্ষণ করে মেয়েটিকে। এরপর পরিচয় প্রকাশ পাওয়ার ভয়ে পাঁচজন মিলে গলাকেটে হত্যা করে তাকে। ঘটনাটি ঘটেছে হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলার রাজাপুর গ্রামে।

এদিকে ধর্ষণ ও হত্যাকান্ডের ঘটনায় সেই পাঁচ বন্ধুর চারজনকে আটক করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। আটককৃতরা ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে হবিগঞ্জের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম সুলতান মাহমুদ প্রধান ও তৌহিদুল ইসলামের আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।

স্বীকারোক্তি দেয়া আসামিরা হলো- বাহুবল উপজেলার রাজাপুর গ্রামের বাসিন্দা ও মেয়েটির প্রেমিক জুবায়ের আহমেদ (২৪), জুবায়েরের বন্ধু সাইফুর রহমান (২৪) ও আবু সাঈদ (২০) এবং উপজেলার মোহনপুর গ্রামের বাসিন্দা ও মেয়েটির দুঃসম্পর্কের চাচা মামুনুর রশিদ (২৩)। অপর এক আসামি পলাতক রয়েছে বলে জানা গেছে।

শনিবার জেলা পিবিআইয়ের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এ তথ্য জানান হবিগঞ্জ পিবিআইয়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কুতুবুর রহমান চৌধুরী।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার চারজন আসামীর বরাত দিয়ে জানান, হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলার রাজাপুর গ্রামের রুমানা বেগমের (২২) সঙ্গে একই গ্রামের জুবায়ের আহমেদের (২৪) প্রেমের সম্পর্ক চলছিল। প্রেমের সম্পর্কের সূত্র ধরে তারা প্রায়ই অনৈতিক সম্পর্কে মিলিত হতো।

গত বছরের ৪ আগস্ট জুবায়ের তার চার বন্ধুকে বলে তিনি বাইরের জেলা থেকে একজন সুন্দরী মেয়ে এনে তার সঙ্গে আমোদ-ফূর্তি করবে। বন্ধুরা যদি ওই মেয়ের সঙ্গে আনন্দ করতে চায় তাহলে প্রত্যেককে ৫০০ টাকা করে দিতে হবে। চার বন্ধু জুবায়েরকে ৫০০ টাকা করে দেয়। টাকা পাওয়ার পর জুবায়ের সিদ্ধান্ত নেয় তার প্রেমিকাকে দিয়ে দেবে বন্ধুদের মনোরঞ্জনের জন্য। তিনি বন্ধুদেরকে রাত সাড়ে ১০টার দিকে রাজাপুর গ্রামের ঈদগাহের পাশে থাকতে বলে।

এদিকে জুবায়ের ওই সময় প্রেমিকা রুমানাকে তার ঘর থেকে ডেকে নিয়ে ঈদগাহের কাছে যায়। সেখানে তিনি তার বন্ধুদের দেখিয়ে তাদের সঙ্গে ফূর্তি করতে বলে। রুমানা রাজি না হওয়ায় জুবায়ের ও তার বন্ধুরা তাকে জোর করে ধর্ষণ করে।

এদিকে রুমানা দুঃসম্পর্কের ভাতিজি হওয়ায় আরেক বন্ধু মামুনুর রশিদ ধর্ষণ করতে রাজি হয়নি। তখন প্রেমিক জুবায়ের রুমানার চোখে হালকাভাবে উড়না দিয়ে বেঁধে দেয়। এরপর রুমানাকে ধর্ষণ করে মামুনুর রশিদ।

একপর্যায়ে ধর্ষণের শিকার রুমানা ক্ষুব্ধ হয়ে প্রেমিক জুবায়েরকে বলেন, ‘তুমি আমার সাথে প্রতারণা করেছ। আমি এ ঘ্টনা সবাইকে বলে দেব।’ এ পরিস্থিতিতে বিষয়টি প্রকাশ হওয়ার ভয়ে ও ধামাচাপা দিতে সবাই মিলে রুমানার গলা কেটে হত্যা করে।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কুতুবুর রহমান চৌধুরী জানান, ওই রাতেই ঘরের মধ্যে মেয়েকে দেখতে না পেয়ে মা বানেছা বেগম মেয়ের খোঁজে ঘর থেকে বের হন এবং আশপাশের লোকজনকে ডাকাডাকি করে মেয়ের সন্ধান পাওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু কোথাও তাঁকে পাননি। পরদিন সকালে স্থানীয় লোকজন বাড়ি থেকে প্রায় ৭০০ গজ দূরে ঈদগাহের কাছে ধানের জমিতে রুমানার লাশ দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেয়।

এ ঘটনায় রুমানার মা অজ্ঞাত লোকদের বিরুদ্ধে বাহুবল থানায় মামলা দায়ের করেন। কিন্তু পুলিশ এই হত্যার কোনো ক্লু উদঘাটন করতে পারেনি। এ অবস্থায় গত বছরের ৫ ডিসেম্বর পিবিআই মামলাটির তদন্তভার গ্রহণ করে।

পিবিআইর পরিদর্শক মাইনুল ইসলাম মামলার তদন্তে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে সন্দেহভাজন আসামি সাইফুর রহমানকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। তার স্বীকারোক্তি মোতাবেক আসামি মামুনুর রশিদকে আটক করা হয়। তারা উভয়েই আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।

পরবর্তীতে তাদের দেয়া তথ্য মোতাবেক আসামি আবু সাইদকে আটক করে পুলিশ। সাইদও আদালতে নিজের অপরাধ স্বীকার করে। সর্বশেষ গত শুক্রবার প্রেমিক জুবায়ের আহমেদকে আটক করে পিবিআই। এরপর শনিবার তাকে আদালতে হাজির করা হলে তিনি ১৬৪ ধারায় প্রেমিকা রুমানাকে গণধর্ষণ ও হত্যার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দেয়। তার স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে পিবিআই হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরি উদ্ধার করে। -নয়া দিগন্ত

-সময়ের সংলাপ২৪/ডি-এইচ