ছাত্রলীগের সঙ্গে মিলেমিশে কাজ করতে আপত্তি নেই: নুর - সময়ের সংলাপ24
DHAKA WEATHER

Post Bottom Ad

demo-image

ছাত্রলীগের সঙ্গে মিলেমিশে কাজ করতে আপত্তি নেই: নুর

Share This
খুব শীগ্রই আমরা Somoyersonglap24.com ওয়েবসাইট নিয়ে আসছি..

ছাত্রলীগের সঙ্গে মিলেমিশে কাজ করতে আপত্তি নেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) নবনির্বাচিত সহ-সভাপতি (ভিপি) নুরুল হক নুর। কারচুপির অভিযোগ তুলে নির্বাচন বর্জন করেও অভাবনীয় জয় পাওয়া কোটা আন্দোলনের এ নেতা সমকালকে বলেছেন, ভিপিসহ সব পদে পুনর্নির্বাচন চান। পুনর্নির্বাচনের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে ভিপি হিসেবে সর্বাত্মক সমর্থন করবেন।

গত বছর সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের ব্যানারে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন করে আলোচনায় আসেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী নুরুল হক। মুহসীন হলের সাধারণ একজন শিক্ষার্থী থেকে ২৪ বছর বয়সী এই তরুণ এক বছরেরও কম সময়ের ব্যবধানে চলে এসেছেন ছাত্র রাজনীতির পাদপ্রদীপে। তাক লাগিয়ে জয় পেয়েছেন বহুল প্রতীক্ষিত ডাকসুর নির্বাচনে ভিপি পদে।

ভোট-পরবর্তী উত্তেজনার মধ্যে গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে টিএসসিতে সমর্থক পরিবেষ্টিত হয়ে সমকালের সঙ্গে কথা বলেন নুরুল হক। বেশির ভাগ প্রশ্নেরই কৌশলী উত্তর দেন। নির্বাচন বর্জন করেও জয়কে সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিজয় বলেছেন।

কারচুপি হলে তিনি কীভাবে জয় পেলেন- এ প্রশ্নে নুরুল হক বলেন, ভোট সুষ্ঠু হলে তার নেতৃত্বাধীন প্যানেলের সবাই জিততেন। তিনি ১১ হাজারের বেশি ভোট পেয়েছেন। তার প্যানেলের জিএস, এজিএস প্রার্থী চার-পাঁচ হাজার ভোট পেয়েছেন, যা সম্ভব নয়। নির্বাচন সুষ্ঠু হলে তিনি নিজেও আরও বেশি ভোট পেতেন বলে দাবি করেন নুর।

গত সোমবার অনুষ্ঠিত ডাকসুর নির্বাচনে একচেটিয়া জয় পেয়েছে আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন ছাত্রলীগ। ২৫টি পদের মধ্যে ভিপি ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক পদে জিতেছে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের প্যানেল। ডাকসুতে ২৩ পদ ছাড়াও ১৮টি হলের ১২টিতে ভিপি এবং ১৪টিতে জিএস পদে জিতেছে ছাত্রলীগ। বাকি পদগুলোতে জয় পেয়েছে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীরা।

ছাত্রলীগ বাদে নির্বাচনে অংশ নেওয়া সব প্যানেল কারচুপির অভিযোগ তুলে ভোট বর্জন করে। পুনর্নির্বাচনের দাবিতে এখনও সরব রয়েছে তারা। ভিপি পদে পুনর্নির্বাচনের দাবি জানালেও ছাত্রলীগ পরে এ অবস্থান থেকে সরে আসে। নুরুল হক দাবি করেছিলেন, ভিপি ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক বাদে বাকি পদে পুনর্নির্বাচন দিতে হবে।

তবে সমকালের সঙ্গে আলাপকালে এ দাবি থেকে সরে আসেন নুরুল হক। তিনি বলেন, ভিপিসহ সব পদেই নির্বাচন চান। পুনর্নির্বাচনের দাবি তুললেও ভিপি পদ গ্রহণ করবেন বলে জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, 'সাধারণ শিক্ষার্থীরা ভোট দিয়েছে, ভিপি পদ স্বীকার করছি।'

ভিপি পদে থেকে পুনর্নির্বাচনের দাবি তোলার কৌশল প্রসঙ্গে নুরুল হকের জবাব, ভিপি হিসেবেই তিনি সাধারণ শিক্ষার্থীদের পুনর্নির্বাচনের আন্দোলন সমর্থন করছেন, আন্দোলনে থাকবেন। ডাকসুতেও যাবেন। সাধারণ ছাত্রদের অধিকার রক্ষায় কাজ করবেন।

ভিপি পদে জয় পেলেও ডাকসুতে সংখ্যালঘু কোটার নেতারা। ২৫ পদের মাত্র দুটিতে জয় পেয়েছেন তারা। এ অবস্থায় কোটার নেতারা তাদের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি কতটা পূরণ করতে পারবেন? এ প্রসঙ্গে নুরুল হক বলেন, ছাত্রলীগের সঙ্গে মিলেমিশে কাজ করতে আপত্তি নেই। ছাত্রলীগ নির্বাচনের আগে হল নির্মাণের মতো অবাস্তব প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, যা পূরণের ক্ষমতা ডাকসুর নেই। তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত করার। এ প্রতিশ্রুতি পূরণে কাজ করবেন।

নুরুল হক বলেন, ডাকসুর মূল কাজ শিক্ষার্থীদের দাবি-দাওয়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে তুলে ধরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেটে ডাকসুর পাঁচজন প্রতিনিধি এ কাজ করেন। তিনি ভিপি হিসেবে তাই করবেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গত দুই দশকে ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠন ছাড়া কেউ হলে থাকতে পারেনি। সহাবস্থান বিরোধী ছাত্র সংগঠনগুলোর প্রধান দাবি দীর্ঘদিন ধরে। নুরুল হক সমকালকে বলেন, তিনি সহাবস্থানের পক্ষে। সব ছাত্র সংগঠনের সহাবস্থান চান হলে এবং ক্যাম্পাসে।

কোটা সংস্কারের আন্দোলন করতে গিয়ে একাধিকবার ছাত্রলীগের হামলার শিকার হয়েছেন নুরুল হক। গতকালও ধাওয়ার মুখে পড়েন। দুই দফা তাকে বেদম মারধর করা হয়। তাকে শিবির বলেও আখ্যা দেওয়া হয়। গতকাল সকালেও নুরুল হককে শিবির নেতা আখ্যা দিয়ে ভিপি হিসেবে মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানান ডাকসুর নবনির্বাচিত জিএস গোলাম রাব্বানী। তবে বিকেলে বক্তব্য উল্টে গোলাম রাব্বানী বলেন, 'নুরুল হক ছাত্রলীগের নেতাকর্মী ছিলেন। আমিই নুরুল হককে কোটা আন্দোলনে নামতে বলেছিলাম।'

নুরুল হক বলেন, 'ছাত্রলীগ একটি নীতিহীন সংগঠনে পরিণত হয়েছে। যখন তাদের প্রয়োজন তখন আমাকে শিবির বানায়, জামায়াত বানায়। আবার যখন প্রয়োজন হয়, তখন ছাত্রলীগ বানায়।'

এতটা মতবিরোধ নিয়ে ডাকসুর জিএস ও অন্য নেতাদের সঙ্গে কী করে কাজ করবেন? এ প্রশ্নে নুরুল হক বলেন, ছাত্রলীগের সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন পরাজয় স্বীকার করে তাকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। তিনি আশা করছেন, ছাত্রলীগের বাকিরা পরিবর্তন হবেন। তাহলেই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে একসঙ্গে কাজ করতে সমস্যা হবে না।

-সময়ের সংলাপ২৪/ডি-এইচ
Comment Using!!

Pages