সিলেটে এখন জমজমাট ফুটপাত-ফুটপাত খেলা! খেলোয়াড়রা একেকজন দক্ষ খেলোয়াড়। একদিকে আছেন নগরপিতা আরিফুল হক চৌধুর ও তার দল। অন্যদিকে, ছোট ব্যবসায়ীরা, ফুটপাতের সাথেই যাদের জীবন আষ্টেপৃষ্টে বাঁধা।
নাগরিক জীবনে নানা বিড়ম্বনার সৃষ্টির বিনিময়ে তারা পেটের ভাত জোগান, জোগান সন্তানদের লেখাপড়া বা চিকিৎসার খরচ। আদালতের নির্দেশনা পালনে মেয়র আরিফ।
একদিকে তাদের উচ্ছেদ করে ফিরে যাচ্ছেন, সাথে সাথে হকাররাও আবার দখল করে নিচ্ছে নিজের আসন। ব্যবসার পসরা সাজিয়ে হাঁক-ডাক করছেন, বিক্রি করছেন পণ্য।
এ অবস্থা চলছে শুক্রবার মধ্যরাত থেকে। তবে উচ্ছেদকৃত হকাররা জানিয়েছেন, ফুটপাতে ফিরে আসা ছাড়া উপায় নাই। খাওনতো লাগবো। তয় বিক্রিবাট্টা নেই বললেই চলে।
মঙ্গলবার বিকেলেও দেখা গেছে হকাররা জিন্দাবাজার ও বন্দরবাজারের বিভিন্ন স্থানে বসে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন।
দ্বিতীয় মেয়াদে নগরপিতার আসনে বসার পর আরিফুল হক চৌধুরী শুক্রবার মধ্যরাত থেকে টানা অভিযান শুরু করেছেন। কখনও বিকেল, কখনও গভীর রাতে, অভিযান চলছেতো চলছেই।
শুধু ফুটপাত থেকে হকারদের আসবাবপত্র নিয়েই যাচ্ছেন না মেয়র বাহিনী, অবৈধ স্থাপনাও গুঁড়িয়ে দিচ্ছেন।
তবে মেয়রের এই অভিযানের সাফল্য নিয়ে কিন্তু সন্দিহান সচেতন মহল। এমনকি, কেউ কেউ পরাজয়ও দেখছেন। অতীত বিশ্লেষণ করলেই এর প্রমাণ পাওয়া যায়।
মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী তার প্রথম মেয়াদের শেষার্ধে আদালতের নির্দেশ পালন করতে গিয়ে শুরু করেছিলেন সিলেটের ফুটপাত মুক্তির অভিযান। তখনও অবস্থাা হয়েছিল বর্তমানের মতো। একদিকে অভিযান চালিয়ে তিনি অন্যকোথাও গেছেন উচ্ছেদে, দেখা গেছে আগের জায়গায় হকাররা আবার বসে পড়েছে।
এরপর আদালতপাড়ায় কয়েকবার বড় বড় অভিযান চালিয়ে কিছুদিন হকারদের বিরত রাখা সম্ভব হলেও, এরপর আবার তারা আস্তে আস্তে ফুটপাত দখল শুরু করেন। মাত্র কয়েকমাসের ব্যবধানে আবারও নগরীর প্রধান প্রধান এলাকাগুলো ফিরে যায় আগের অবস্থায়।
এবারও তাই হবে বলেই মনে করছেন সচেতন নাগরিক সমাজ। তাদের মতে, পূণর্বাসনের উদ্যোগ বাস্তবায়ন না করে হাজারবার হকার উচ্ছেদ করলেও সাফল্য আসবেনা। হারতে হবে। কারণ, অভাবের যন্ত্রণা মেটাতে তারা ফুটপাত দখল করে ব্যবসা করছে।
রফিক উদ্দিন, আব্দুল কাইয়ুম ও আবুল মিয়া দীর্ঘদিন থেকে সিলেটের জিন্দবাজার এলাকায় ব্যবসা করছেন। ফুটপাতেই। মঙ্গলবার বিকেলে কথায় কথায়এ প্রতিবেদককে বললেন, না বইসা উপায় নাই ভাই। করুম কি? খামু কি? এই যে বসছি, তেমন বিক্রি নাই।
তারা সবাই জানিয়েছেন, আপাতত জমানো টাকা খাচ্ছেন। এ অবস্থা চলতে থাকলে ক’দিন পর উপোশ থাকতে হবে।
উচ্ছেদকৃত হকারদের পূণর্বাসন প্রক্রিয়ার অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে মঙ্গলবার রাতে মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর মোবাইলে কয়েকবার কল দিলেও তা বন্ধ পাওয়া গেছে।
-সময়ের সংলাপ২৪/ডি-এইচ

কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন