চারদিনেও খোঁজ মেলেনি সিলেটে নিখোঁজ হওয়া দুই যুবকের। নিখোঁজদের একজন সিলেট এমসি কলেজের ছাত্র। একই দিনে দুই যুবকের নিখোঁজের ঘটনায় আতঙ্ক বিরাজ করছে সিলেটে। এদিকে- বৃহস্পতিবার রাতে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে জকিগঞ্জ থেকে এক ডাক্তারকে তুলে নিয়ে যায় একদল যুবক।
পুলিশ বলছে- ওই তিন যুবককে খোঁজা হচ্ছে। কেউ তাদের অপহরণ করেছে না তারা নিজ থেকে আত্মগোপন করেছে সেটি জানার চেষ্টা করা হচ্ছে। এদিকে- নিখোঁজ যুবকদের সন্ধান পেতে প্রতিদিনই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কার্যালয়ে ছুটে যাচ্ছে স্বজনরা। নিখোঁজ দুই যুবক হচ্ছে ইমাদ উদ্দিন সুহিন, সাজ্জাদ হোসেন। এর মধ্যে সুহিন ও সাজ্জাদ নিখোঁজের ঘটনায় সিলেটের শাহপরাণ থানায় জিডি করা হয়েছে। তিনজনই নিখোঁজ হন গত বুধ ও বৃহস্পতিবারে।
নিখোঁজ ইমাদ উদ্দিন সুহিনের বাড়ি কমলগঞ্জ উপজেলার শংকরপুর গ্রামে। তার পিতা মো. রমিজ মিয়া। আর সাজ্জাদ হোসেন সিলেটের এমসি কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। সে নগরীর টিলাগড় এলাকায় বসবাস করতো। তার গ্রামের বাড়ি হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জের পশ্চিম নোয়াগাঁও গ্রামে। তার পিতা মুক্তিযোদ্ধা ইদ্রিস আলী। স্বজনরা জানিয়েছেন- বুধবার সন্ধ্যায় সিলেট নগরীর টিলাগড় থেকে ইমাদ উদ্দিস সুহিন নিখোঁজ হন।
তিনি ওই দিন মৌলভীবাজারের ভানুগাছ থেকে পাহাড়িকা এক্সপ্রেসে সিলেটে অবস্থানরত এক আত্মীয়ের সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন। তার সঙ্গে ফোনে কথা বলার ১০ মিনিট পর থেকে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন বন্ধ রয়েছে। সুহিনের মামা হাফিজুর রহমান জানান, টিলাগড় এলাকা থেকে সুহিন নিখোঁজ হয়।
এরপর থেকে সে কোথায় আছে পরিবারের কেউ জানেন না। এ ঘটনায় থানায় শাহপরাণ থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছে। পাশাপাশি তারা র্যাব-৯ এর সদর দপ্তরেও যোগাযোগ করেছেন। সিলেটের এমসি কলেজে যাওয়ার পথে বৃহস্পতিবার নিখোঁজ হন সাজ্জাদ হোসেন নামের এক ছাত্র। টিলাগড় শাপলাবাগ এলাকা থেকে পার্শ্ববর্তী এমসি কলেজে যাওয়ার পথে নিখোঁজ হন তিনি। সাজ্জাদ এমসি কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান তৃতীয় বর্ষের ছাত্র।
এই ঘটনায়ও শাহপরাণ থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। সাজ্জাদ আলীর বড় ভাই সুজিদ সুজাহিদ আলী জানিয়েছেন- তারা এখনো সাজ্জাদ আলীর সন্ধান পাননি। বাড়ি থেকে সিলেটে এসে তারা ভাইয়ের খবর করছেন। তার ভাই কোনো রাজনৈতিক দল কিংবা নাশকতার কোনো কাজে জড়িত নয় বলে জানিয়েছেন সুজাহিদ।
শাহপরাণ থানার ওসি মো. আক্তার হোসেন জানিয়েছেন- দুই যুবক নিখোঁজের ঘটনায় পরিবারের স্বজনরা শাহপরাণ থানায় জিডি করেছেন। জিডির পর থেকে পুলিশ তাদের খুঁজছে। কিন্তু তাদের পাওয়া যাচ্ছে না। তিনি বলেন- তাদের সন্ধানে প্রযুক্তিগত অনুসন্ধান চালানো হচ্ছে। তারা নিজ থেকে নিখোঁজ হয়েছে কী না- সে ব্যাপারে এখনো পরিষ্কার তথ্য মিলেনি। এদিকে, বুধবার রাত ৮টায় সিলেটের কদমতলী থেকে নিখোঁজ হন আবুল বাশার কাহের নামক যুবক।
শনিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে ওসমানী মেডিকেল কলেজ এলাকায় তাকে অসুস্থ অবস্থায় পাওয়া যায়। তবে- এ ব্যাপারে বাশার কোনো তথ্য দেয়নি। এদিকে- ডিবি পুলিশ পরিচয়ে সিলেটের জকিগঞ্জ থেকে ডা. মাহফুজুল আলমকে বৃহস্পতিবার রাতে তুলে নেয় একদল যুবক। নিখোঁজ ডাক্তার মাহফুজ কসকনকপুর গ্রামের আবদুল মান্নানের ছেলে।
পরিবারের লোকজন জানান- রাত ১০টার দিকে বাড়ি থেকে তাকে তুলে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে পরিবারের স্বজনরা ডিবি পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও তাদের সন্ধান পাননি। এদিকে- ডা. মাহফুজ নিখোঁজের খবর পেয়ে জকিগঞ্জ থানার ওসি হাবিবুর রহমান হাওলাদার তার সন্ধানে চেকপোস্ট বসিয়েও তল্লাশি চালান। পাশাপাশি তিনি ডিবি পুলিশে খবর নিয়ে জানতে পারে ওই দিন ডিবি পুলিশ জকিগঞ্জে কোনো অভিযান চালায়নি।
-সময়ের সংলাপ২৪/ডি-এইচ
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন