ক্রিস গেলকে অবজ্ঞা করলে কী হয়, সেটা নিশ্চয়ই ফ্র্যাঞ্চাইজি মালিকরা এখন বুঝতে পারছেন। একাদশ আইপিএলের নিলামে গেলের নামটা যখন উঠেছিল, তখন অবজ্ঞার ছায়া দেখা গিয়েছিল প্রতিটা টেবিলেই। কিংস ইলেভেন পঞ্জাব তাঁকে নিয়েছিল পরে। ন্যূনতম দামে।
গেল অপমানিত হলেও বুঝতে দেননি। বৃহস্পতিবার মোহালিতে এ বারের আইপিএলের প্রথম সেঞ্চুরি করার পরে পুরস্কার নিতে এসে হাতটা একবার তুলে বলে গেলেন, ‘‘ক্রিস গেল নামটা ভুলে যাবেন না! কিছুটা সম্মান দেখান।’’
নামটা কি এর পরে আর কেউ ভুলে যাওয়ার সাহস দেখাবেন? বোধ হয় না। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে নিজের ২১ নম্বর এবং আইপিএলে ছয় নম্বর সেঞ্চুরি করে উঠৈ ‘ইউনিভার্স বস’ বলেন, ‘‘অনেকেই ভেবেছিল, আমি বোধ হয় বুড়ো হয়ে গিয়েছি। অনেকেই বলেছিল, ক্রিসের এ বার অনেক কিছু প্রমাণ করার আছে। আমার কিছু প্রমাণ করার নেই। তবে এটুকু বলব, আমাকে দলে নিয়ে আইপিএলকে বাঁচিয়ে দিল বীরেন্দ্র শেওয়াগ’’এতেই অবশ্য থেমে থাকেননি টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের সম্ভবত সব চেয়ে ধ্বংসাত্মক ব্যাটসম্যান। তিনি বলেন, ‘‘কিছু দিন আগে শেওয়াগ বলেছিল, ক্রিস গেল যদি দু’টো ম্যাচও জিতিয়ে দিতে পারে, তা হলে ওদের টাকা উসুল হয়ে যাবে। এই নিয়ে এ বার আমাকে শেওয়াগ সঙ্গে কথা বলতে হবে!’’
ম্যাচের মাঝে হোক বা শেষে, কথা বলার সময় বার বার নিজের মেয়ের কথা বলেছেন গেল। ‘‘এই সেঞ্চুরিটা মেয়েকে উৎসর্গ করলাম। আর মিনিট দু’য়েক বাদে (ঘড়ির কাটা তখন রাত বারোটা ছুঁই ছুঁই) ওর দু’বছর হবে। এই সেঞ্চুরিটা ওর জন্যই।’’ মোহালির পিচ যে তাঁর খুব পছন্দ হয়েছে, সেটা বোঝা যাচ্ছিল গেলের কথায়। পাশাপাশি বলছিলেন, ‘‘সেঞ্চুরিটা করতে পেরে খুব ভাল লাগছে। যে ফ্র্যাঞ্চাইজির হয়েই খেলি না কেন, মাঠে নামলে সেরাটা দেওয়ার জন্য বদ্ধপরিকর থাকি। আমি জানি, সময় কারও জন্য থেমে থাকে না। যত দিন সম্ভব আমি ক্রিকেট উপভোগ করতে চাই।’’
গেলের প্রশংসা ভেসে আসছে ক্রিকেট দুনিয়ার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে। কায়রন পোলার্ড, ডোয়েন ব্র্যাভো থেকে ব্রেন্ডন ম্যাকালাম— শ্রদ্ধাশীল সবাই। সানরাইজার্স হায়দরাবাদের অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন ম্যাচ শেষে বলেন, ‘‘ক্রিসকে অভিনন্দন। আমরা জানতাম, ও কী করতে পারে। আর সেটাই করে দেখাল। এই পিচ কিন্তু খুব সহজ ছিল না স্ট্রোক খেলার পক্ষে।’’ পঞ্জাব অধিনায়ক আর অশ্বিনের মন্তব্য, ‘‘এক কথায় গেলের ইনিংসকে বোঝানো সম্ভব নয়। ও যখন খেলে, কারও কিছু করার থাকে না।’’
-সময়ের সংলাপ২৪/ডি-এইচ