ঢাকা: ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর গুলিতে গত পাঁচ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বাংলাদেশি নিহত হয়েছে বলে বলছে বাংলাদেশের মানবাধিকার সংস্থাগুলো।
আইন ও সালিশ কেন্দ্র বলছে, চলতি বছরে এ পর্যন্ত বিএসএফের গুলিতে ৪৫ জন বাংলাদেশি নিহত হয়েছে। গতবছর এই সংখ্যা ছিল ৩৩ জন।
মঙ্গলবার ভোরেও বাংলাদেশের ঠাকুরগাঁওয়ের সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে হেমন্ত চন্দ্র নামের একজন বাংলাদেশি নিহত হয়েছে।
ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলার সীমান্তে ভারত থেকে গরু নিয়ে ফেরার সময় এই ঘটনা ঘটে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
আইন ও সালিশ কেন্দ্রের পরিচালক নুর খান লিটন জানিয়েছেন, এ বছর মারা যাওয়া ৪৫ জনের মধ্যে ৩১ জন গুলিতে আর ১৪ জন শারীরিক নির্যাতনে নিহত হয়েছে।
তিনি বলেন, দু’দেশের সরকারপ্রধানদের মধ্যে সীমান্তে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা শূন্যে নামিয়ে আনার আলোচনা হয়েছে, ভারত প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিল। কিন্তু তা আর কার্যকর হয়নি। এ ধরণের হত্যাকাণ্ডের বিচার না হওয়াটা এর একটি বড় কারণ বলে তিনি মনে করেন।
মানবাধিকার সংস্থা ‘অধিকার’ বলছে, এ বছর নভেম্বর মাস পর্যন্ত বিএসএফের গুলিতে ৪১ জন বাংলাদেশি নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে অন্তত ৬০ জন। আর ২৭ জন বাংলাদেশিকে বিএসএফ অপহরণ করেছে।
অধিকারের সাধারণ সম্পাদক আদিলুর রহমান খান বলেন, ২০১০ সালের পর এ বছর বিএসএফের গুলিতে সবচেয়ে বেশি বাংলাদেশি নিহত হয়েছে। বাংলাদেশের নাগরিকদের প্রতি বিএসএফ কোনো প্রকার সম্মানই দেখাচ্ছে না। বরং তারা আগ্রাসী ভূমিকা নিয়েছে।
এমনকি অনেক সময় তারা বাংলাদেশের ভেতরে এসেও আক্রমণ করছে, বলেন মি. খান।
অধিকারের হিসাবে, ২০১৩ সালে সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে নিহতের সংখ্যা ছিল ২৯ জন। ২০১২ সালে ৩৮ জন আর ২০১১ সালে ৩১ জন।
এর আগে ২০১০ সালে এই সংখ্যা ছিল ৭৪ জন।
অধিকার বলছে, দু’দেশের মধ্যে অবৈধ অনুপ্রবেশ কারীকে গ্রেফতার ও হস্তান্তরের সমঝোতা এবং চুক্তি থাকলেও, বিএসএফ সেটি লঙ্ঘন করে সীমান্তে বাংলাদেশিদের দেখামাত্রই গুলি করছে।
অধিকারের মতে, বিএসএফ তাদের ‘দেখামাত্র গুলি’ নীতি থেকে একবিন্দুও সরে আসেনি।