আরেকটা সিরিজ নাহয় এভাবে খেললাম: সাকিব - সময়ের সংলাপ24
DHAKA WEATHER

Post Bottom Ad

demo-image

আরেকটা সিরিজ নাহয় এভাবে খেললাম: সাকিব

Share This
খুব শীগ্রই আমরা Somoyersonglap24.com ওয়েবসাইট নিয়ে আসছি..

হজ থেকেই সরাসরি যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার কথা ছিল পরিবারের সঙ্গে ছুটি কাটাতে। কিন্তু সেই সিদ্ধান্ত বদলে এক দিনের জন্য ফিরতে হয়েছিল দেশে। আরেকটি সিদ্ধান্ত যে নেওয়ার বাকি ছিল! সেই সিদ্ধান্ত স্বস্তি হয়ে এসেছে বাংলাদেশ দলের জন্য। আঙুলের অস্ত্রোপচার পিছিয়ে দিয়ে এশিয়া কাপে খেলছেন সাকিব আল হাসান। ছুটি শেষে যুক্তরাষ্ট্র থেকেই সরাসরি দলের সঙ্গে যোগ দেবেন দুবাইয়ে। ফোনে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে দেওয়া সাক্ষাতকারে বাংলাদেশের অলরাউন্ডার কথা বললেন অস্ত্রোপচার পেছানো, তিন নম্বরে খেলা ও আসছে এশিয়া কাপ নিয়ে।

এশিয়া কাপে খেলার সিদ্ধান্ত নেওয়া কতটা কঠিন ছিল?
সাকিব আল হাসান: খেলার সিদ্ধান্ত নেওয়া কখনোই খুব কঠিন নয়। না খেলার সিদ্ধান্ত নেওয়া কঠিন। আমি কিন্তু কখনোই বলিনি যে এশিয়া কাপ খেলব না। আঙুলের ইনজুরির কথা ভেবেই বলছিলাম যে, যত দ্রুত সম্ভব অপারেশন করাতে চাই।
সেটি ছিল সেই মুহূর্তের চাওয়া। সময়ের সঙ্গে বাস্তবতা বদলায়, চাওয়াও বদলাতে পারে। পরে সবার সঙ্গে কথা বলে মনে হয়েছে, এশিয়া কাপে খেলা জরুরি। দলের যখন প্রয়োজন, তখন খেলার সিদ্ধান্ত নেওয়া খুব সহজ।

মূলত বিসিবির সভাপতির চাওয়ার একটি বড় ভূমিকা তো ছিল এই সিদ্ধান্তে?
সাকিব: পাপন ভাইয়ের সঙ্গে কথা তো হয়েছেই। হজের সময়ও এটা নিয়ে কথা হয়েছে উনার সঙ্গে। তবে সেটাই সব নয়। ফিজিওর সঙ্গে কথা হয়েছে। আমি নিজেও একমত হয়েছি। সবাই মিলেই সিদ্ধান্ত হয়েছে।

ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজ শেষে বলেছিলেন শতভাগ ফিট না থেকে খেলতে চান না। তো আপনি নিজে কখন একমত হলেন? নিজেকে কিভাবে বোঝালেন?
সাকিব: ফিজিওর সঙ্গে কথা বলার পর। দেখুন, দলের প্রয়োজনই আমার কাছে সবসময় সবকিছুর আগে। দল যখন কিছু চাইছে, তখন নিজের সিদ্ধান্ত বা চাওয়া নিয়ে আবার ভাবতেই হয়।
তবে অবশ্যই ফিজিওর মতামত খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল। আমার জিজ্ঞাসা ছিল, খেললে সমস্যা হবে কিনা। ফিজিও বলেছেন, আপাতত চাইলে খেলতে পারি। আরেকটা ব্যাপার ছিল, খেললে ইনজুরি বাড়বে কিনা। ফিজিও বলেছেন, সেই শঙ্কা খুব একটা নেই। এরপর সিদ্ধান্ত নিতে সময় লাগেনি। 
পুরো ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজ তো ব্যথা নিয়েই খেললাম। দলের যখন প্রয়োজন, আরেকটা সিরিজ নাহয় খেললাম ইনজেকশন নিয়ে!

কিন্তু ওই আঙুলে যদি আবার বল লাগে বা কোনো ভাবে চোট লাগে?
সাকিব: সেই শঙ্কা তো খেলাধূলায় সবসময়ই থাকে। এমনিতেই যে কোনো সময় ইনজ্যুরড হতে পারি। দেখা গেল, এই আঙুলে কিছু হয়নি, অন্য কোনো ইনজুরিতে পড়লাম। খেলায়াড়দের সবসময়ই এসব শঙ্কাকে সঙ্গী করে মাঠে নামতে হয়। অত ভাবলে তো আর চলে না।

অধিনায়কের চাওয়া কি ছিল?
সাকিব: মাশরাফি ভাই কিছুই বলেননি। আমার ওপরই ছেড়ে দিয়েছিলেন।

তাহলে এশিয়া কাপ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই অস্ত্রোপচার?
সাকিব: এখনও পর্যন্ত সেটিই সিদ্ধান্ত। এশিয়া কাপ শেষে যত দ্রুত সম্ভব। তবে সেটা অস্ট্রেলিয়ায় হবে, নাকি ইংল্যান্ডে না যুক্তরাষ্ট্রে, সেই সিদ্ধান্ত হয়নি।

আঙুল নিয়ে শেষ প্রশ্ন। আপনি বলেছিলেন, আঙুলের কারণে ব্যাটিংয়েই মূলত সমস্যা হয়। কিন্তু এখন ব্যাটিংয়ে আপনার আরও বড় দায়িত্ব, তিন নম্বরে ব্যাট করছেন। লম্বা ইনিংস খেলতে হয় এখানে। সে্ জায়গায় কি একটু আপোস করা হলো?
সাকিব: আপোসের কিছু নেই। বললাম না, দলের প্রয়োজনই আমার কাছে সবকিছুর আগে। ওয়েস্ট ইন্ডিজে এই আঙুল নিয়ে খেলেও তো খারাপ করিনি (তিন ম্যাচে ৯৭, ৫৬ ও ৩৭)।
আগে যেটা বলেছিলাম যে, শতভাগ ফিট না হয়ে খেলতে চাই না, সেটা হলো আইডিয়ালি আপনি যা চান। অবশ্যই সবাই চাইবে শতভাগ ফিট হয়ে খেলতে, যেন দলকে শতভাগ দিতে পারে। আমিও সেটিই চাই। কিন্তু দলের চাওয়ার সঙ্গে নিজের চাওয়া মেলালে প্রয়োজনের ধরনটা অন্যরকম হতেই পারে।
ব্যাপারটা হলো আমার নিজের। আরেকটা সিরিজ কষ্ট করে, হয়তো ইনজেকশন নিয়ে খেলতে হবে। ব্যাটিংয়ে সেরকম প্রভাব আশা করি পড়বে না।

তিন নম্বরের প্রসঙ্গ যখন এলো, এই বছরের শুরুতে তিনে নামার পর থেকে তো আপনি দারুণ ধারাবাহিক। সাত ইনিংসে চারটি ফিফটি, একবার কেবল আউট হয়েছেন ৩৫-এর নিচে। শুরুটায় আপনি নিজে কতটা খুশি?
সাকিব: পারফরমারের তৃপ্তি বলে কিছু নেই। আর আমি ব্যক্তিগত পারফরম্যান্স নিয়ে কখনো ভাবিও না। সবসময়ই বলে এসেছি, দলের জয়ে অবদান রাখতে পারলেই খুশি। সেটা যত রানই হোক, যে পজিশন থেকে হোক। তবে হ্যাঁ, তিন নম্বরে আমার চেয়ে ভালো তো মনে হয় আমাদের দলে আর কেউ করেনি!

তিন নম্বরে ৫টির বেশি ইনিংস খেলা ব্যাটসম্যানদের মধ্যে আপনার গড় (৪২.৪৪) বাংলাদেশের সর্বোচ্চ…
সাকিব: পরিসংখ্যান আমি দেখিনি, তবে ধারণা করছিলাম। এই তো, শুরুটা খারাপ হয়নি বলেই তো মনে হয়!

খারাপ হয়নি, কিন্তু আরও ভালোও হতে পারত হয়তো। তামিম ইকবাল আর আপনার রান-সেঞ্চুরির লড়াই নিয়ে অনেকবারই আপনি মজা করে বলেছেন যে পাঁচ-ছয়ে ব্যাট করে বড় ইনিংস খেলা কঠিন। তিনে নামার সিদ্ধান্ত নেওয়ার পেছনে নিশ্চয়ই সেটির বড় ভূমিকা ছিল, বড় ইনিংস খেলা!
সাকিব: তিনে খেলার সিদ্ধান্ত আমার একার নয়। আমি চেয়েছি, এরপর অধিনায়ক, টিম ম্যানেজমেন্ট রাজী হয়েছে বলেই সম্ভব হয়েছে। বড় ইনিংস তো অবশ্যই খেলতে চাই, সেটা যেখানেই খেলি। ওয়েস্ট ইন্ডিজে যেমন সেঞ্চুরির খুব কাছে ছিলাম, আর ৩ রান হলেই বলতে পারতেন যে বড় ইনিংস খেলেছেন!
অবশ্য ক্রিকেটে ব্যাপারটাই এমন। ৯৯ হলেও সেঞ্চুরি নয়, সেঞ্চুরি তো সেঞ্চুরিই। দেখা যাক, শুরুটা খারাপ হয়নি, এটা একটা স্বস্তি। বড় ইনিংস নিশ্চয়ই আসবে।

দলে অবদানের কথা সবসময় বলেন, সেদিক থেকে ধারুণ হয়েছে অবশ্য। এবছর যে সাতটি ম্যাচে তিনে ব্যাট করলেন, তামিমের সঙ্গে জুটি ৭৮, ৯৯, ১০৬, ১০, ২০৭, ৯৭, ৮১। বাংলাদেশর বাস্তবতায় প্রায় অবিশ্বাস্য ধারাবাহিকতা…  উইকেটে তামিমের সঙ্গে বোঝাপড়া ভালো বলেই কি এই সাফল্য?
সাকিব: এত বছর একসঙ্গে খেললে একটা বোঝাপড়া তো হয়ই। দুজনই হয়ত একে অপরের ব্যাটিংয়ের ধরন ভালো বুঝি। আমরা এতদিন ধরে খেলছি, দল তো আমাদের কাছে এটুকু চাইতেই পারে।

এশিয়া কাপ দুয়ারে দাঁড়িয়ে। বাংলাদেশের সম্ভাবনা কেমন দেখছেন?
সাকিব: বিশ্বাস করুন, এশিয়া কাপ নিয়ে এখনও কিছুই ভাবিনি। ভাবলে সত্যিই বলতাম। পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাচ্ছি, পুরো সময় পরিবারকেই দিচ্ছি। ক্রিকেট মাথায় নেই। যখন দুবাইয়ে যাব, তখন থেকে এশিয়া কাপ নিয়ে ভাবতে শুরু করব।

এই মুহূর্তে যদি ভাবতে বলা হয়, গ্রুপ পর্বে বাংলাদেশের দুই প্রতিপক্ষের সঙ্গে লড়াই কেমন হবে?
সাকিব: শ্রীলঙ্কা দলটা গুছিয়ে উঠছে। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজ হারলেও শেষ দিকে কিন্তু দারুণ খেলেছে। দুবাই-আবুধাবিতে পাকিস্তানের সঙ্গে অনেক ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতাও আছে ওদের।

আফগানিস্তানকে গোণায় রাখতেই হবে। হয়ত খুব বেশি দূর যেতে পারবে না, কিন্তু ওদের যা শক্তি, তাতে যে কোনো দিনই যে কোনো কিছু করার সামর্থ্য আছে। খুব ব্যালান্সড দল। আমাদের খুব ভালো খেলতে হবে।

প্রথম পর্ব উতরালে সামনে ভারত-পাকিস্তান…
সাকিব: বিরাট কোহলি না থাকলেও ভারত দারুণ দল। কোহলি ছাড়া তো সবাই আছে। ব্যাটিং লাইন আপে ম্যাচ উইনার অনেক। বোলিং দারুণ। দুই রিস্ট স্পিনার (যুজবেন্দ্র চেহেল ও কুলদীপ যাদব) দারুণ করছে।
পাকিস্তান দুর্দান্ত ফর্মে আছে। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির চ্যাম্পিয়ন ওরা। ২০১৫ সালে ওদেরকে আমরা যখন হোয়াইটওয়াশ করেছিলাম, তার চেয়ে এই দল অনেক ভালো ও আত্মবিশ্বাসী। ব্যাটিং তবু যেমন-তেমন, বোলিংটা অসাধারণ। বাঁহাতি পেসার, ডানহাতি পেসার, জোরে বোলার, সুইং বোলার, লেগ স্পিনার, বাঁহাতি স্পিনার, সব মিলিয়ে অনেক বৈচিত্র দলে, অনেক অলরাউন্ডার আছে। আমাদের কাজটা সহজ হবে না।

পাকিস্তানের তো হোম ভেন্যু দুবাই-আবুধাবি। বাংলাদেশের খুব বেশি জনের অভিজ্ঞতা নেই ওখানে খেলার। আপনি খেলেছেন পিএসএলে, আসলে কেমন ওখানকার কন্ডিশন?
সাকিব: পাকিস্তান একটু সুবিধা তো পাবেই। আর কন্ডিশন ওখানে সত্যিই আলাদা। এশিয়ার মধ্যে হলেও আমাদের উপমহাদেশের মতো নয়। গরম আমাদের এখানেও আছে, তবে ওই গরম অন্যরকম। উইকেটও। আমি বলে বোঝাতে পারছি না কেমন আলাদা, কিন্তু ওখানে গেলে বোঝা যায়। আসলেই আলাদা। একটা ভালো ব্যাপার যে আমরা দুয়েকদিন আগে যাচ্ছি। দেখা যাক, ভালো কিছুর আশাই করছি।

হজ করার পর কি নিজের মধ্যে পরিবর্তন টের পাচ্ছেন?
সাকিব: তার মানে কি বলতে চাচ্ছেন, আগে খারাপ ছিলাম, এখন ভালো? হাহাহাহা...।
সিরিয়াসলি বললে, আসলেই এটা অন্যরকম অনুভূতি। ঠিক বলে বোঝানোর নয়। জীবন ধারণা অনেক কিছুই বদলে যাবে। চিন্তা-ভাবনার অন্যরকম একটা গভীরতা আসে ভেতর থেকে। -বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম

-সময়ের সংলাপ২৪/ডি-এইচ
Comment Using!!

Pages