সাউথ আফ্রিকা ট্যুরে বাংলাদেশ এখন তাদের ফার্স্ট টেস্ট খেলছে পচেফস্ট্রুম গ্রাউন্ডে। টাইগার কোচ হাতুড়ে সিংহে ট্যুর শুরুর আগে বলেছিলেন এই সিরিজে আমরা দেখে নেবো বাংলাদেশের টেস্ট ক্রিকেট কতটুকু এগুলো। ম্যাচ শুরুর আগে উইকেট কেমন হতে পারে সেটা নিয়ে অনেক পরীক্ষা নিরীক্ষা করেছেন টিম ম্যানেজমেন্ট। জানা গেলো এবং বুঝা হলো পিচটি হবে খুবই ব্যাটিং সহায়ক। টেস্ট ক্রিকেটে টস বিশাল একটি ফ্যাক্টর। মুশফিক টস জিতলেন এবং বিশ্লেষকদের অবাক করে দিয়ে ডিসিশন নিলেন ফিল্ডিংয়ের। তিন পেসার আর এক জন স্পিনার যারা কোনভাবেই ওয়ার্ল্ড ক্লাস নন তাদেরকে নিয়ে ব্যাটিং প্যারাডাইজ উইকেটে কেন এই দুঃসাহস কারই বোধগম্য হলো না। ক্রিকেট বোদ্ধারা এখন প্রশ্ন করতেই পারেন টেস্ট ক্রিকেটে আমরা এগুলাম না পিছুলাম?
যা হবার তাই হলো। ডিন এলগার ও হাশিম আমলার সেঞ্চুরি আর মারক্রামের আনলাকি ৯৭ রানে ৩ উইকেটে ৪৯৬ রান করে ফার্স্ট ইনিংস ডিক্লেয়ার করে দিলো সাউথ আফ্রিকা। টাইগার ভক্তরা বিস্ময়ের সাথে আরেকটি চেঞ্জ দেখলেন মুশফিকের জায়গায় কিপিং করছেন লিটন দাস। মুশফিকের ক্যাপ্টেনসিতে দেখা গেলো এলোমেলো ভাব। কিপিং না করার প্রভাব পড়তেই পারে তার উপর।
মুস্তাফিজ, শফিউল, তাসকিন এবং মিরাজ কেউই লাইন লেন্থ ঠিক রেখে বল করতে পারেন নি। এখানেও গেম প্লেনে ভুল ছিল বলা যায়। লিটনকে না নিয়ে যদি বেস্ট ইলেভেনে তাইজুলকে খেলানো হতো তাহলে হয়তো বোলিংয়ে ভেরিয়েশন আনা যেতো। বাংলাদেশ ইনিংসে আমরা দেখেছি সাউথ আফ্রিকান স্পিনার কেশব মহারাজ উইকেটে প্রচুর টার্ন পেয়েছেন এবং দখলে নিয়েছেন ৩ উইকেট। তাইজুল প্রয়োজনে রান করতেও পারদর্শী।
ধরে নিলাম টস হেরে ফিল্ডিংয়ে নেমেছে বাংলাদেশ। পরে যখন ব্যাট করতে নামলো ফ্লাট উইকেটটি তখনো ভেঙে পড়ে নি, তাহলে বড় একটি পার্টনারশিপও গড়তে কেন ব্যর্থ হলো টাইগাররা?
যাদেরকে কোচ হাতুড়ী টিমেই রাখতে চান না সেই মুমিনুল ও মাহমুদ উল্লাহ নিজেদের প্রমাণ করলেন টেস্ট ক্রিকেটে তাদের অপরিহার্যতা। মুমিনুলের ৭৭ আর মাহমুদ উল্লাহর ৬৬ বাংলাদেশকে ফলো অন থেকে বাঁচিয়ে দেয়। কোচ নিয়ে বিসিবি'র চিন্তা ভাবনা করতে আর দেরী করা হয়তো ঠিক হবে না।
৩২০ রানে বাংলাদেশ অল আউট হয়ে গেলে ১৭৬ রানের লিড পায় সাউথ আফ্রিকা। সেকেন্ড ইনিংসে অনেকটাই ছন্দ ফিরে পেয়েছেন মুস্তাফিজ ও শফিউল। দুই ওপেনার এলগার ও মারক্রামকে ফিরিয়ে দিয়েছেন তারা। যদিও দিনশেষে ৫৪ রান নিয়ে ২৩০ রানে এগিয়ে তারা। আজ উইকেট থেকে ফায়দা তুলতে হবে টাইগার বোলারদের। সাড়ে তিনশ রানের মধ্যে আটকে রাখতে পারলে ব্যাটসম্যানরা বিরাট একটি চ্যালেঞ্জ পেয়ে যাবে তখন। এই সবই ধারণা। সাউথ আফ্রিকায় আমাদেরকে শিখতে হবে অনেক কিছু।
লেখক: সিনিয়র সাংবাদিক
-সময়ের সংলাপ24/ডি-এইচ