আন্তর্জাতিক ডেস্ক: রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের উপর হত্যাযজ্ঞ, ধর্ষণ ও নৃশংসতা চালিয়েছে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে নিরীহ রোহিঙ্গাদের ঘরবাড়ি। জনশূন্য হয়ে পড়েছে প্রায় দুইশতাধিক রোহিঙ্গা গ্রাম। সেনাবাহিনী সেখানে ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে।
তবে আন্তর্জাতিক চাপের মুখে মিয়ানমার সরকারের অনুমতি নিয়ে মঙ্গলবার ২০ রাষ্ট্রদূত রাখাইন রাজ্য পরিদর্শন করেছেন।
পরিদর্শন শেষে এক বিবৃতিতে তারা জানান, তারা মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের রোহিঙ্গা গ্রামগুলো পরিদর্শনকালে ধ্বংসযজ্ঞের চিহ্ন দেখতে পেয়েছেন। সেখানে রোহিঙ্গাদের বাড়ি-ঘর পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। বসতবাড়ির বাসিন্দারা অন্য কোথাও পালিয়ে গেছে।
সন্ত্রাসের অভিযোগে রাখাইনে সংখ্যালঘু মুসলমানদের ওপর সে দেশের সেনাবাহিনীর বর্বর হামলার ঘটনার পাঁচ সপ্তাহ পর সেখানে বিদেশি কূটনীতিকরা প্রথমবারের মতো সফরে যান।
যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন, ব্রিটেন, জার্মানি, ফ্রান্স, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, চেক প্রজাতন্ত্র, ডেনমার্ক, ইতালি, নেদারল্যান্ডস, নিউজিল্যান্ড, নরওয়ে, সার্বিয়া, সুইজারল্যান্ড, তুরস্ক, স্পেন, সুইডেন ও ফিনল্যান্ডের কূটনীতিকরা এই সফরে অংশ নেন।
বিবৃতিতে রাষ্ট্রদূতরা বলেন, আমরা দেখেছি গ্রামগুলো পুড়ে গেছে এবং সেখানে কোনো মানুষজন নেই। সেখানকার সহিংসতা অবশ্যই থামাতে হবে।
কূটনীতিকরা আরো বলেন, আমরা ওই সফরে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় দেখেছি এবং আমরা আরেকবার আহ্বান জানাচ্ছি সেখানে যেন মানুষ নির্বিঘ্নে বসবাস করতে পারে। পাশাপাশি ওই রাজ্যে জীবনরক্ষাকারী সেবা পৌঁছাতে হবে এবং অন্য রাজ্যের সাথে কোনো বৈষম্য রাখা যাবে না।
বিবৃতিতে বলা হয়, সেনাবাহিনীর উচিত কোনো ধরনের বৈষম্য না করে রাখাইন রাজ্যের সব মানুষের জান-মাল রক্ষা করা। তারা বলেন, এই সহিংসতার বিষয়ে উচ্চপর্যায়ে বিশেষজ্ঞদের দ্বারা তদন্ত হওয়া উচিত।
কূটনীতিকরা ‘ইউএন ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশন’কে রাখাইন রাজ্য পরিদর্শনের অনুমতি দেয়ার আহ্বান জানান।
উল্লেখ্য, গত ২৫ আগস্ট রাখাইন রাজ্যে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর পরিকল্পিত হত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞ শুরুর পর পাঁচ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে। জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, রাখাইন থেকে বিতাড়িত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গার সংখ্যা এখন সাত লাখ ছাড়িয়েছে। প্রতিদিনই বাড়ছে এ সংখ্যা।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন