২০১৬ সালের ৩ অক্টোবর। সেদিন সিলেটের প্রাচীন বিদ্যাপীঠ মুরারী চাঁদ (এমসি) কলেজে স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষা দিতে গিয়েছিলেন সিলেট সরকারি মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী খাদিজা বেগম। পরীক্ষা দিয়ে বের হওয়ার পর পথে তাকে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে জখম করেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অনিয়মিত শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ নেতা বদরুল আলম।
রক্তাক্ত খাদিজাকে উদ্ধার করে আশংকাজনক অবস্থায় প্রথমে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয় ও পরে ঢাকায় স্কয়ার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। মৃত্যু মুখে চলে যাওয়া খাদিজা চিকিৎসকদের অক্লান্ত পরিশ্রমে শেষ পর্যন্ত বেঁচে যান।
বিভীষিকাময় এই ঘটনার এক বছর পর কেমন আছেন খাদিজা বেগম?
জানা গেছে, এখনো পুরোপুরি সুস্থ্য হয়ে উঠেননি তিনি। বাম হাত ও পা এখনো ঠিক হয়নি তার। মানসিকভাবে পুরোপুরি সুস্থ্য হয়ে ওঠেননি। তার দিন পার হওয়ার কথা ছিল কলেজে, লাইব্রেরিতে বা পড়ার টেবিলে। অথচ এখন সারা দিন তিনি সময় পার করেন হাত আর পায়ের ব্যায়াম করে। তার এখন একটাই চেষ্টা, সুস্থ্য হয়ে ওঠা ও ভালভাবে বাঁচা।
খাদিজার বড় ভাই শাহরান হক শাহীন খদিজার সর্বশেষ শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে জানান, সে (খাদিজা) এখনো পুরোপুরি সুস্থ্য হয়ে উঠেনি। বাম হাত ও পায়ে এখনো সমস্যা অনুভব করে। বলতে গেলে শরীরের বাম অংশে এখনো সমস্যা রয়ে গেছে। যদিও প্রতিদিন সে ব্যয়াম করছে। অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে চিকিৎসার ফলোআপের জন্য তাকে ঢাকায় পাঠানো হবে।
তিনি বলেন, ‘এখনো সে সুস্থ্য হয়ে উঠেনি। এ জন্য পড়ালেখা চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এখন নিজে নিজে ব্যয়াম করে আর ছোট ভাইকে পড়াচ্ছে। এভাবেই তার দিন পার হচ্ছে। তবে আশা করছি আগামী শিক্ষাবর্ষে তাকে আবার কলেজে পাঠাতে পারব। ’
রক্ষণশীল যৌথ পরিবারে বেড়ে উঠা খাদিজার পড়ালেখা উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করার পর বন্ধ হয়ে যেত। তবে শাহীন চাইতেন তার বোন উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হোক। সহশিক্ষায় পরিবারের আপত্তি থাকায় খাদিজাকে ভর্তি করিয়ে দেওয়া হয় সিলেট মহিলা কলেজে। শাহীন জানান, এখনো তার পড়ালেখার প্রতি আগ্রহ আছে। তাই তাকে পড়ানোর চিন্তা আছে।
খাদিজা বলেন, পড়ালেখা শেষ করে ব্যাংকার হতে চান তিনি। -সময়ের সংলাপ24/ডি-এইচ