করোনাভাইরাসের(কভিড-১৯) ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতিতে গণমাধ্যম কর্মীদের কাজের ধরন বদলে যাচ্ছে। দিন যতই যাচ্ছে তাদের জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ সামনে আসছে। এই ঝুকিপূর্ণ পরিস্থিতি সামলাতে অনেন পত্রিকা ছাপা বন্ধ করেছে। তবে তথ্য জানার জন্য টেলিভিশনের উপর মানুষের নির্ভরতা বেড়েছে।
করোনার বিরুদ্ধে যে যুদ্ধ তাতে চিকিৎসক, মাঠপ্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাথে সাংবাদিকরাও লড়ছেন এক কাতারে। বিশেষ করে সম্প্রচার সংবাদকর্মীরা সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিয়ে মাঠে কাজ করে যাচ্ছেন। তথ্য সংগ্রহ, প্রতিবেদন তৈরিও হয়ে গেছে চ্যালেঞ্জিং। তাই কাজের ধরনও পাল্টে গেছে।
নিয়মিত সংবাদ সম্মেলন হচ্ছে না। বেশিরভাগ সংবাদ সম্মেলনই করা হচ্ছে অনলাইনে। সেখান থেকেই ফুটেজ সংগ্রহ করে প্রতিবেদন তৈরি করছেন সংবাদকর্মীরা। সেই সাথে চ্যানেলগুলো নিজেদের মধ্যে ফুটেজ আদান-প্রদানও করছে।
এ বিষয়ে ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের প্রধান বার্তা সম্পাদক আশিস সৈকত বলেন, আমরা কিন্তু ফুটেঝ শেয়ারিং করছি এখন। এক টেলিভশন চ্যানেল কোনো ফুটেজ পেলে সেটি আমরা অন্যদের সাথে শেয়ার করছি। আমি পেলে অন্যকে দিচ্ছি, অন্যরা পেলে আমাকে দিচ্ছে। এটা কিন্তু বাংলাদেশের গণমাধ্যমের জন্য নতুন মাত্রা, ক্রাইসিস মোকাবিলার জন্য একসাথে কাজ করা।
গণমাধ্যম আফিসের চিত্রও অনেকটা হাসপাতালের মতো। সংবাদকর্মীদের নিরাপত্তার বিষটি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখছে কর্তৃপক্ষ। সার্বক্ষণিক ডেস্ক, কম্পিউটারসহ সবকিছু পরিস্কার করা হচ্ছে। অফিসে মাস্ক পড়েই কাজ করছেন সবাই।
ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের বার্তা প্রধান মামুন আব্দুল্লাহ বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোতে যখন কোনো সংবাদকর্মী যাচ্ছেন, তার যতটুকু প্রস্তুতি দরকার আমরা তা দিচ্ছি। হ্যান্ড স্যানিটাইজার, হ্যান্ড গ্লাভস, মাস্ক থেকে শুরু করে পিপিই নিয়ে যেতে বলছি।
এটিএন নিউজের প্রধান নির্বাহী সম্পাদক মুন্নি সাহা বলেন, বাস্তবতার সাথে করোনাভাইরাস আরেকটি বাস্তবাতা নিয়ে এসেছে তা হলো সাবধানতা। সাবধানতার পুরোটাই, আগে নিজেরা বাঁচবো তারপর খবর জানাবো, এটি মেনেই সবগুলো গণমাধ্যম সেভাবে কাজ করছে।
তবে করোনায় ভিন্ন চ্যালেঞ্জও মোকাবিলা করতে হচ্ছে। বিশেষ করে সার্কুলেশন কমে যাওয়ায় এবং অর্থনৈতিক নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে অনেক পত্রিকাই তার ছাপা বন্ধ করে দিয়েছে। অনলাইন ভার্সনে কার্যক্রম চালাচ্ছে তারা।
দৈনিক কালের কন্ঠের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মোস্তফা কামাল বলেন, এখন আমরা যে ক্রাইসিসে পড়েছি সেটা হলো পত্রিকার সার্কুলেশন ব্যাপকভাবে কমে গেছে। বর্তমানে এর চার ভাগের এক ভাগ আছে, বাকীটা নেই। কারণ অধিকাংশ বিভাগ, জেলায় আমাদের পত্রিকা বিলি করতে পারছে না।
অনলাইন এবং পত্রিকার সংবাদকর্মীরা বাসায় বসেই তাদের কাজ করে যাচ্ছেন।
গুজব প্রতিরোধ করতে হলে আস্থা রাখতে রাখবে হবে মূলধারার গণমাধ্যমের উপর। সঠিক সময়ে সঠিক তথ্য দিয়ে সংবাদকর্মীরা আছেন আপনাদের সাথে। আর আপনিও সরকারের নির্দেশনা মেনে বাসায় থেকে করোনার বিরুদ্ধে এই যুদ্ধে সামিল হন।
-সময়ের সংলাপ২৪/ডি-এইচ
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন