রেজাউলের গল্পটা সত্যিই অন্যরকম। দুর্ঘটনায় একটি পা হারিয়েছেন বেশ কয়েকবছর আগে। তারপর ভিক্ষাবৃত্তিতেই চলতো তার ৪ সদস্যের সংসার। দেশে করোনাভাইরাসের অঘোষিত লকডাউনে বন্ধ হয়ে গেল সেটাও। কে টাকা দেবে, রাস্তায় যে কোনো মানুষই নেই। একই অবস্থা বস্তির অন্যান্যদেরও। হতাশায় মুষড়ে পড়ার পরিবর্তে রেজাউল যেন ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে দাঁড়ালেন। ভিক্ষা করে দীর্ঘদিনের জমানো ১২ হাজার টাকা দিয়ে ৬০ জন প্রতিবেশীকে কিনে দিলেন চাল, ডাল, আলু, সাবান।
রেজাউলের গ্রামের বাড়ি রংপুরের লালমনিরহাট জেলায়। ভাগ্যের চাকা ঘোরাতে ৯ বছর আগে চট্টগ্রামে এসেছিলেন। কিন্তু চাকা তো ঘুরেইনি, উল্টো দুর্ঘটনায় একটি পা নাই হয়ে গেল রেজাউলের! তারপর থেকে চট্টগ্রাম নগরের বিভিন্ন এলাকায় ভিক্ষা করেই জীবন নির্বাহ করছেন। থাকেন বায়েজিদ বোস্তামী এলাকার একটি বস্তিতে।
রেজাউলের প্রতিবেশীদের কেউ রিকশা চালায়, কেউবা দিনমজুর। করোনার কারণে সবার উপার্জনই থমকে গেছে। অর্ধাহারে-অনাহারে দিন কাটছিল তাদের। প্রতিবেশীর এই কষ্ট সহ্য হয়নি রেজাউলের। গত ৪ এপ্রিল আনুষ্ঠানিকভাবে ত্রাণ বিতরণ করলেন ৬০ পরিবারের মধ্যে!
রেজাউলের ভাষ্য, ‘আমার হাতে জমানো কিছু টাকা আছে কিন্তু তা দিয়ে প্রতিবেশীকে অনাহারে রেখে একা খাই কীভাবে? তাই সবাইকে নিয়েই খেতে চেয়েছি। এ যুদ্ধে আমরা সবাই একসঙ্গে লড়াই করব। খেলেও একসঙ্গে, না খেলেও একসঙ্গে।’
-সময়ের সংলাপ২৪/ডি-এইচ
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন