সড়ক দুর্ঘটনায় পা হারানো সুরুজ মিয়ার ভিক্ষা করে সংসার চালানো মিয়ার একমাত্র পেশা। পা হারানো সুরুজ মিয়ার কাঁধের একটি হাড়ও ভাঙ্গা। আগে রিকশা চালিয়ে সংসারের বোঝা টানলেও পরে পা হারিয়ে ভিক্ষাবৃত্তিতে নামেন তিনি। উপজেলার বড়হিত ইউনিয়নের বড়হিত গ্রামের মৃত আবদুল জব্বারের ছেলে সুরুজ মিয়া (৫০)। দুই মেয়ে ও এক ছেলের বাবা তিনি। দুই মেয়েকে বিয়ে দিয়ে দিয়েছেন। ভিক্ষার টাকায় তার ছেলে এবার এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছেন।
সুরুজ মিয়া বলেন, পুলিশের টহলের মধ্যে অনেকটা ভয়ে ভয়ে ভিক্ষা করার জন্য বাজারে এসেছি। কিন্তু বাজারে এসে দেখি মানুষ শূন্য। কোথাও কেউ নেই। ছলছল চোখে স্ট্রেচারে ভর করে ঘুরছেন পৌর শহরের সড়ক জুড়ে। কিন্তু তাকে ভিক্ষা দেবার মতোও মানুষ নেই কোথাও।
সুরুজ আরও বলেন মিয়া বলেন, আগে তিনি ভিক্ষা করে তিন-চারশো টাকা পেতেন প্রতিদিন। কিন্তু ভয়ে কয়েকদিন ঘরে বসে ছিলেন। এখন ঘরে খাবার নেই। তাই দুদিন ধরে বাজারে আসছেন। মানুষের কাছ হাত পেতে স্ত্রী সন্তানের জন্য খাবারের জোগান দেবেন বলে। কিন্তু কে দেবে ভিক্ষা। কেউ তো নেই। এখন সারাদিন ঘুরলে চল্লিশ-পঞ্চাশ টাকার ওপরে পাননা।
মৃত্যুর ভয়ের চেয়ে পেটের ক্ষুধার জ্বালা অনেক বেশি ভয়ঙ্কর সুরুজ মিয়ার। ঘরে বসে থাকলে খাবার দেবে কে? তাই বের হয়েছি। কিন্তু, রাস্তাঘাটে কোন মানুষ নাই ভিক্ষাও পাইতাছি না। পেট চলব কেমনে?
ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জাকির হোসেন বলেন, আমরা সবাইকে সাধ্যমত সহযোগীতা করে যাচ্ছি। আপনি সুরুজ মিয়ার নাম, ঠিকানা, মোবাইল নাম্বার থাকলে আমাকে এসএমএস করে দিবেন। আমি তার বাড়িতে সাহায্য পাঠানোর ব্যবস্থা করব।
হোম কোয়ারেন্টিনে থাকা অথবা করোনা মোকাবেলায় হতদরিদ্রদের জন্য সরকারের ত্রাণ ও পূনর্বাসন তহবিল থেকে জেলায় ১০০ মেট্রিক টন চাল ও ১০ লাখ টাকা বরাদ্দ এসেছে বলে জানিয়েছেন জেলা ত্রাণ ও পূনর্বাসন কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ।
ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসক মিজানুর রহমান জানিয়েছেন, খাবারের অভাবে যেন নিম্ন আয়ের মানুষের কষ্ট পেতে না হয় সেদিকে তিনি খেয়াল রাখছেন।
খাবারের পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ১০ টাকার চাল কর্মসূচি চালু আছে। লোক সমাগম না করে কীভাবে প্রকৃত উপকারভোগীদের কাছে খাদ্যদ্রব্য পৌঁছে দেওয়া যায় সে বিষয়ে তিনি চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
-সময়ের সংলাপ২৪/ডি-এইচ
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন