স্পোর্টস ডেস্ক: জাতীয় ক্রিকেট দলের ওয়ানডে অধিনায়ক, নড়াইল এক্সপ্রেস মাশরাফি বিন মর্তুজার ৩৪তম জন্মদিন ছিল গতকাল। ১৯৮৩ সালের ৫ অক্টোবর তিনি জন্মগ্রহণ করেন। একই সঙ্গে তার ছেলে সাহেলেরও ৩য় জন্মদিন ছিল। এই লিজেন্ড স্পোর্টসম্যানের জন্য শুভকামনা।
মাশরাফির জন্মদিনে দেশবাসীর কাছে দোয়া প্রার্থনা করেছেন তার পরিবার-পরিজন। অভিনন্দন জানিয়েছেন মাশরাফির অসংখ্য ভক্ত সমর্থকরা। বাপ-ছেলের জন্মদিনকে ঘিরে মাশরাফি ভক্তদের মাঝে চলছে উৎসবের আমেজ। দিনব্যাপী রয়েছে নানা আয়োজন।
মাশরাফি বিন মর্তুজা ১৯৮৩ সালের ৫ অক্টোবর নড়াইল শহরের আলাদাতপুরে নানাবাড়ীতে জন্মগ্রহণ করেন। নানাবাড়ীতেই কেটেছে শৈশবের পুরোটা সময়। মাশরাফির বাবার নাম গোলাম মর্তুজা স্বপন এবং মাতার নাম হামিদা মর্তুজা বলাকা। ছোটবেলা থেকেই খেলাধূলার প্রতি আগ্রহী ছিলেন মাশরাফি। তাদের বাড়ির পাশেই ছিল স্কুল মাঠ। তিনি ঐ মাঠে ক্রিকেট খেলতেন। স্কুলের মাঠে বড়দের ক্রিকেট খেলা দেখে মাশরাফির ক্রিকেটের প্রতি আকর্ষণ তৈরি হয়।
নব্বইয়ের দশকে নড়াইলের ক্রিকেটার-সংগঠক শরীফ মোহাম্মদ হোসেন প্রতিভাবান তরুণদের নিয়ে কাজ শুরু করেন। মাত্র ১১ বছর বয়সের মাশরাফিকে এই সংগঠকই তার ক্লাব নড়াইল ক্রিকেট ক্লাবে খেলার সুযোগ করে দেন।
তারপর থেকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। ৯১’এর দিকে মাগুরায় বিকেএসপির প্রতিভা অন্বেষণ ক্যাম্পের কোচ বাপ্পির সান্নিধ্যে এসে বোলিংয়ের অনেক মৌলিক বিষয়ের সঙ্গে পরিচিত হন বাংলাদেশের অধিনায়ক। পরের বছর জাতীয় কোচ ওসমান খান নড়াইলে এক প্রশিক্ষণ ক্যাম্প চালাচ্ছিলেন। ওই সময় মাশরাফির আমন্ত্রণ আসে খুলনায় খেলার জন্য।
খুলনায় তার গতি ও সুইং হইচই ফেলে দেয়। সেই সূত্রে খুলনা বিভাগীয় অনুর্ধ্ব-১৭ দলে সুযোগ এবং ঢাকায় আসা। পরবর্তীতে সুযোগ পান জাতীয় অনুর্ধ্ব-১৯ দলে। সেসময়কার বোলিং কোচ অ্যান্ডি রবার্টসের পরিচর্যায় পাল্টে যান মাশরাফি। অনুর্ধ-১৯ দলে থাকতে দারুন পারফরম্যান্সের কারণে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বাংলাদেশ-এ’ দলে খেলার সুযোগ পান। এ নিয়ে সমালোচনাও কম হয়নি। কারণ তখনো মাশরাফি ঢাকার কোনো সিনিয়র ডিভিশন লীগেও খেলেননি।
তবে সমালোচকদের মোক্ষম জবাব নিজের পারফরমেন্সের মাধ্যমেই দিয়েছিলেন মাশরাফি। সেই সিরিজে মাশরাফি এক ম্যাচে চার উইকেট নিয়েছিলেন। এরপর নিউজিল্যান্ড সফরে গিয়ে তার নাম হয়ে যায় ‘নড়াইল এক্সপ্রেস’। এরপর একমাত্র ইনজুরি ছাড়া কোনকিছুই মাশরাফিকে আটকাতে পারেনি।
তার শিক্ষাজীবন শুরু হয় নড়াইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। নড়াইল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০০১ সালে এসএসসি পাশ করেন। এইচএসসি পাশ করেন নড়াইল ভিক্টোরিয়া কলেজ থেকে ২০০৩ সালে। এরপর দর্শন শাস্ত্রে অনার্স কোর্সে ভর্তি হন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে। ভিক্টোরিযা কলেজে পড়ার সময় সুমনা হক সুমির সঙ্গে তার পরিচয়, এরপর ২০০৬ সালে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ। মাশরাফি ও সুমি দম্পতির ঘরে রয়েছে দুটি সন্তান-মেয়ে হুমায়রা মর্তুজা এবং ছেলে সাহেল মর্তুজা।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন