‘মধুর বসন্ত এসেছে মধুর মিলন ঘটাতে... নবীন বসন্ত আইল নবীন জীবন ফুটাতে’ বা আকাশে বহিছে প্রেম, নয়নে লাগিল নেশা, কারা যে ডাকিল পিছে! বসন্ত এসে গেছে... মধুর অমৃত বাণী, বেলা গেল সহজেই; মরমে উঠিল বাজি; বসন্ত এসে গেছে। হ্যাঁ বাংলায় এসেছে ঋতুরাজ বসন্ত।
পয়লা ফাল্গুন, ঋতুরাজ বসন্তের প্রথম দিন। এ দিনে প্রকৃতির কাননে কাননে পারিজাতের রঙের কোলাহলে ভরে ওঠবে চারদিক। কচি পাতায় আলোর নাচনের মতোই বাঙালির মনেও লাগবে রঙের দোলা।
ফাগুনের আগুনে পুড়ে যাবে ‘পলাশ গাছ’। অসমাপ্ত কবিতাটা পাবে শেষ দাড়িটার সন্ধান। এই বসন্তেই খোলসের আবরণ ছেড়ে বেড়িয়ে আসবে তুলতুলে পাখি ছানারাও! ফুলে ফুলে ঢলে ঢলে ভোর বেলায় বাড়ি ফিরে যাবে মাতাল ভ্রমর। ফুলের সৌরভ ছড়াতে আবার এসেছে মাতাল বসন্ত। ফাল্গুনের হাওয়া দোল লেগেছে প্রকৃতিতে। নতুনরূপে সেজেছে ঋতুরাজ।
পাতার আড়ালে আবডালে লুকিয়ে থাকা বসন্তের দূত কোকিলের মধুর কুহুকুহু ডাক, ব্যাকুল করে তুলবে অনেক বিরোহী অন্তর। এদিনে অসংখ্য রমনী বাসন্তী রঙে নিজেদের রাঙিয়ে রাজধানীর রাজপথ, পার্ক, বইমেলা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সবুজ চত্বরসহ পুরো নগরী সুশোভিত করে তুলবে। সুশোভিত করে তুলবে গোটা দেশ।
বঙ্গাব্দ ১৪০১ সাল থেকে প্রথম ‘বসন্ত উৎসব’ উদযাপন করার রীতি চালু হয়। সেই থেকে জাতীয় বসন্ত উৎসব উদযাপন পরিষদ বসন্ত উৎসব আয়োজন করে আসছে। এ ছাড়া তরুণ-তরুণীরা বাংলা একাডেমি আয়োজিত একুশের বইমেলা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস, শাহবাগ, চারুকলা চত্বর, পাবলিক লাইব্রেরি, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, ধানমন্ডি লেক, বলধা গার্ডেন মাতিয়ে রাখবে সারা দিন।
জাতীয় বসন্ত উৎসব উদযাপন পরিষদ : বসন্তের নাচ, গান ও কবিতার পাশাপাশি প্রতিবাদী নাচ, গান ও আবৃত্তিরও আয়োজন করেছে জাতীয় বসন্ত উৎসব উদযাপন পরিষদ। সকাল ৭টায় চারুকলা অনুষদের বকুলতলায় শুরু হবে এই উৎসব। বিকাল সাড়ে ৩টা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত একযোগে এ অনুষ্ঠান চলবে চারুকলা অনুষদের বকুলতলা, পুরান ঢাকার বাহাদুর শাহ পার্ক, লক্ষ্মীবাজার এবং ধানমন্ডি ৮ নম্বর রোডসংলগ্ন রবীন্দ্রসরোবর উন্মুক্ত মঞ্চে। পুরান ঢাকায় বসন্তের দোলা পৌঁছে দেওয়ার জন্য তৃতীয়বারের মতো বাহাদুর শাহ পার্কে এ অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়েছে।