সিলেট-১ আসনে বিএনপির প্রার্থী হলেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির। অন্যদিকে আগেই এ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ঘোষণা করেছে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের ছোটো ভাই ড. একে আব্দুল মোমেনকে। রেওয়াজ আছে এ আসন থেকে যে জয়লাভ করে সেই দলই সরকার গঠন করে। ফলে এ আসনের জয়-পরাজয় গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন আওয়ামী লীগ ও বিএনপি।
বিএনপির মনোনয়ন না পাওয়া প্রসঙ্গে আমাদের নতুন সময়কে ইনাম আহমদ চৌধুরী বলেন, আমি মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী, নির্বাচন করলেই যে একজন অন্যজনের শক্রু হবে এটা আমি বিশ্বাস করি না। এ কারণে আমার এই মতের সঙ্গে অন্যদের মিল না থাকায় আমি নির্বাচন থেকে সরে এসেছি। তবে প্রচারণায় অংশ না নিলেও আব্দুল মুক্তাদিরের প্রতি আমার সমর্থন থাকবে।
গতকাল রাত সাড়ে ৮ টার দিকে দলীয় কার্যালয়ে খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির হাতে চূড়ান্ত মনোনয়নপত্র তুলে দেয়া হয়েছে। এদিকে- মনোনয়নপত্র হাতে পাওয়ার পর খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির জানিয়েছেন- সবাইকে সঙ্গে নিয়ে তিনি সিলেট-১ আসনটি বেগম খালেদা জিয়াকে উপহার দিতে চান। এর আগে বিএনপি থেকে প্রাথমিক মনোনয়ন দেয়া হয় চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির ও প্রাইভেটাইজেশন কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ইনাম আহমদ চৌধুরীকে। মনোনয়নপত্র দাখিল করে এ দুই নেতা ছিলেন সিলেটের মাঠে। এ নিয়ে দলের নেতাকর্মীরা পড়েছিলেন দ্বিধাদ্বন্ধে। শেষ মুহূর্তে তিনি বাদ পড়েছেন।
সিলেট-১ আসনের বর্তমান এমপি ও অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের ছোট ভাই ড. মোমেন নির্বাচন কমিশনে মনোনয়নের সঙ্গে নিজের হলফনামাও জমা দিয়েছেন। তা থেকে জানা যায়, মোমেনের হাতে নগদ আছে ১ কোটি ৭ লাখ ৯৩ হাজার টাকা এবং ১ হাজার ৯৪৬ দশমিক ৬৩ ইউএস ডলার। পিএইচডি করা মোমেন শিক্ষকতা ও অন্যান্য পেশায় জড়িত। তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই। তিনি বছরে বাড়ি, দোকান বা অন্যান্য খাত থেকে ভাড়া বাবদ ৩ লাখ ৯৮ হাজার; ব্যবসা থেকে ৩৮ হাজার; শেয়ার, সঞ্চয়পত্র বা ব্যাংক আমানত থেকে ৩ লাখ ৮০ হাজার; পেশা থেকে ২৭ লাখ ৪১ হাজার টাকা এবং অন্যান্য খাত থেকে ৩০ হাজার টাকা আয় করেন।
বিএনপি নেতা খন্দকার মুক্তাদির ঋণে ডুবে আছেন । তার নামে প্রায় সাড়ে ৯ কোটি টাকার একক ঋণ। তিনি ট্রাস্ট ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক, আল আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান এবং ইউনিয়ন ক্যাপিটাল লিমিটেডের চেয়ারম্যান, এমডি বা পরিচালক পদে রয়েছেন। তার নামে ট্রাস্ট ব্যাংকে ১৭২ কোটি ৩৬ লাখ ৬৭ হাজার টাকা, এক্সিম ব্যাংকে ৪৩ কোটি ৫৫ লাখ ৬৩ হাজার টাকা, ব্র্যাংক ব্যাংকে ৯ কোটি ৭ লাখ ১৪ হাজার টাকা, আল আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংকে ৮৭ কোটি ৪৬ লাখ ৩১ হাজার টাকা, ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তানে ৫ কোটি এবং ইউনিয়ন ক্যাপিটালে ১৩ কোটি ৫০ লাখ ২৩ হাজার টাকা ঋণ রয়েছে। মুক্তাদিরের নামে বিপুল অঙ্কের দায়ও রয়েছে। ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তানে তার দায় ৮ কোটি ৩৫ লাখ ৮৫ হাজার টাকা, এক্সিম ব্যাংকে ৮৭ লাখ টাকা, সিটি ব্যাংকে প্রায় ১৮ লাখ টাকা। এমএসসি পাস মুক্তাদিরের বিরুদ্ধে পাঁচটি মামলা আদালতে বিচারাধীন।-আমাদেরসময়.কম
-সময়ের সংলাপ২৪/ডি-এইচ