২২ দিন বন্ধ থাকার পর সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুক খুলে দিলেও ভাইবার, হোয়াটসঅ্যাপসহ ইন্টারনেটে যোগাযোগের অন্য মাধ্যমগুলো শিগগিরই খুলছে না। নিরাপত্তার বিষয়ে সতর্কতার কারণেই এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন সরকারের নীতিনির্ধারকেরা।
ফেসবুক খুলে দিলেও ইন্টারনেট যোগাযোগের অন্য মাধ্যমগুলো না খোলার বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান আজ বৃহস্পতিবার প্রথম আলোকে বলেন, ‘অ্যাপসগুলো বন্ধ রাখা হয়েছে, কারণ সব অ্যাপস লোকেট বা মনিটরিং করা যায় না। নিরাপত্তার দৃষ্টিকোণ থেকে পর্যালোচনা করে ওই সব অ্যাপস খোলার বিষয়ে পরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিমও বলেছেন, নিরাপত্তার বিষয়ে যখন কোনো হুমকি থাকবে না, তখন অন্য অ্যাপসগুলো খুলে দেওয়া হবে।
একটানা ২২ দিন বন্ধ থাকার পর আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে সরকার ফেসবুক খুলে দেয়। বেলা দেড়টার দিকে ফেসবুক খুলে দেওয়ার বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। একই সময়ে টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিমও সচিবালয়ে সাংবাদিকদের ফেসবুক খুলে দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এরপরই বেলা ১টা ৪৫ মিনিটে দেশের সব মোবাইল অপারেটর ও ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট গেটওয়ে (আইআইজি) অপারেটরদের ফেসবুক খুলে দেওয়ার নির্দেশনা পাঠায় বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)।
তারানা হালিম বলেন, জাতীয় নিরাপত্তা এখন বিঘ্নিত হবে না—সেটি নিশ্চিত হয়েই সরকার ফেসবুক খুলে দিয়েছে।
ফেসবুক খোলার ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের প্রত্যক্ষ ভূমিকার কথা তুলে ধরেন জুনাইদ আহমেদ। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, দেশের তরুণদের কথা মাথায় রেখে তিনি (সজীব ওয়াজেদ) ফেসবুক খুলে দিতে অনুরোধ করেন। বিজনেস প্রসেস আউটসোর্সিং (বিপিও) ফ্রিল্যান্সিংসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ফেসবুক না থাকায় সমস্যায় পড়ছিলেন তরুণেরা।
জুনাইদ আহমেদ আরও বলেন, ফেসবুকভিত্তিক অপরাধ কার্যক্রমের বিষয়টি ভবিষ্যতে সতর্কতার সঙ্গে দেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। ফেসবুক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে গত ১৮ নভেম্বর থেকে ফেসবুক, ভাইবার, হোয়াটসঅ্যাপসহ ইন্টারনেটে যোগাযোগের বেশ কিছু মাধ্যম বন্ধ করে দেয় সরকার। প্রথমে ফেসবুক, ম্যাসেঞ্জার, ভাইবার ও হোয়াটসঅ্যাপ বন্ধ করার নির্দেশনা দেয় বিটিআরসি। পরে আরেকটি নির্দেশনায় লাইন, ট্যাংগো, হ্যাংআউটসহ আরও কয়েকটি মাধ্যম বন্ধের কথা জানানো হয়। তবে এ কাজটি করতে গিয়ে ওই দিন প্রায় দেড় ঘণ্টা ইন্টারনেট থেকে বিচ্ছিন্ন থাকে বাংলাদেশ।